হস্তান্তরের আগেই মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা পরিষদের পাশে নির্মিত মডেল মসজিদে এ ফাটল ধরেছে।
২০১৮ সালের শেষের দিকে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অধীন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বাস্তবায়নে ৪৩ শতক জমির ওপর মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয়। আর এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। নির্মাণকাজের দায়িত্ব পান খায়রুল কবির রানা নামের এক ঠিকাদার। গত বছরের ২১ জুন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে মসজিদের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এখনো কিছু কাজ বাকি থাকায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কাছে মসজিদটি হস্তান্তর করেনি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এরই মধ্যে মসজিদের দেয়াল ও ছাদে ফাটল দেখা দেওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মুসল্লিরা। মুসল্লিদের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় মসজিদে ফাটল ধরেছে। যেকোনো সময় মসজিদ ভেঙে পড়তে পারে।
গতকাল শনিবার মসজিদের দ্বিতীয়-তৃতীয় তলায় বিভিন্ন দেয়াল ও ছাদে ফাটল ধরেছে। এটি দেখে স্থানীয় মুসল্লিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মসজিদ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।
মডেল মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মাসুদুর রহমান বলেন, ‘মসজিদে বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। এটি এখন আমাদের জন্য আতঙ্কের কারণ। যেকোনো সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।’
মসজিদ দেখতে আসা কাঁঠালডাঙ্গী এলাকার নুরুন নবী বলেন, ‘নামাজ পড়ার আগেই দেখছি ফাটল ধরেছে। উদ্বোধনের আট মাসের মধ্যে যেহেতু ফাটল ধরেছে আরও বড় ধরনেরও ফাটল থাকতে পারে। এটি ধসে পড়লে বড় দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটতে পারে।’
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে ঠিকাদার খায়রুল কবির রানার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এদিকে গত বুধবার গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) এম কে এম নুরুল হাসান মসজিদটি পরিদর্শনে যান। তিনি বলেন, ‘কিছু জায়গার পলেস্তারায় ফাটল দেখা গেছে। এটি আমরা দ্রুত ভেঙে নতুনভাবে পলেস্তারা করে দেব। জনসাধারণের আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই।’
ঠাকুরগাঁও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মশিউর রহমান বলেন, ‘আমি সরেজমিন মসজিদটির বেশ কয়েকটি স্থানে লম্বা ফাটল দেখেছি। শুধু দ্বিতীয়-তৃতীয় তলায় নয়, নিচতলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংযোগস্থলে ফাটল রয়েছে। কিছু অনিয়ম তো হয়েছেই, না হলে এমনটি হওয়ার কথা নয়।’
এ প্রসঙ্গে হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ফাটলের বিষয়টি নিয়ে আমি গণপূর্ত বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলছে (গণপূর্ত বিভাগ) দেয়ালে যে ফাটল দেখা দিয়েছে, এটি দালানের ফাটল নাকি পলেস্তারার ফাটল—বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখা হবে। দেয়ালটির পলেস্তারা খসানোর কথা রয়েছে। এরপর যদি কোনো অনিয়ম পাওয়া যায় তাহলে আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন দেব।’