নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ডাকে গত জুলাইয়ে টানা ২২ দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকেরা। সরকারের উচ্চপর্যায়ের আশ্বাসে ক্লাসে ফেরার তিন মাস পরও সেই দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।
শুধু বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকেরাই নন; পদোন্নতি, নতুন পদ সৃষ্টি, আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ নানা দাবিতে গত মাস থেকে আন্দোলনে নেমেছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। সর্বশেষ ২ অক্টোবর দিনব্যাপী কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা দশম গ্রেডের দাবিতে আন্দোলনে আছেন দীর্ঘদিন। পাঠদানের পাশাপাশি নিজেদের দাবি আদায়ে আন্দোলনও করতে হচ্ছে শিক্ষকদের।
শিক্ষক নেতাদের অভিযোগ, জাতীয়করণ, পদোন্নতি, পদ সৃষ্টি, স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো, গ্রেড বৃদ্ধিসহ নানা বৈষম্য দূর করার আশ্বাস মিললেও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এতে শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে।
এমন বাস্তবতায় আজ ৫ অক্টোবর সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব শিক্ষক দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার জন্য শিক্ষক: শিক্ষক স্বল্পতা পূরণ বৈশ্বিক অপরিহার্যতা। দেশে এবারই প্রথম সরকারিভাবে দিবসটি পালন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২২ সালের জরিপ অনুযায়ী, দেশে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত শিক্ষক আছেন ১৪ লাখের বেশি। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনগুলোতে ৭ লাখ ৬২ হাজার ৭০৯ জন এবং মাধ্যমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তরে ৬ লাখ ৫৬ হাজার ৮৫৫ জন।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বেসরকারি মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণে দুটি কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়। অথচ তিন মাসেও এ বিষয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। বিষয়টি শিক্ষক সমাজের জন্য হতাশাজনক।’
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনার পরও শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিষয়টি হতাশার।
শিক্ষাবিদ ও ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, সরকারের উচিত শিক্ষকদের ন্যায়সংগত দাবি-দাওয়া গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা। কারণ, শিক্ষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে শিক্ষার্থীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর প্রভাব পুরো শিক্ষাব্যবস্থার ওপর পড়ে।