ঝিকরগাছায় জমে উঠেছে পৌর নির্বাচনের প্রচার। কনকনে শীত উপেক্ষা করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রচার চালাচ্ছেন। ভোটারও চুলচেরা হিসাব করছেন প্রার্থীদের নিয়ে। ভোটাররা বলছেন, নির্বাচনে ছয় প্রার্থী অংশ নিলেও মূল লড়াই হবে নৌকার প্রার্থী মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল ও কম্পিউটার প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমরান হাসান সামাদ নিপুণের মধ্যে।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ জন, কাউন্সিলর পদে ৬৪ ও নারী কাউন্সিলর পদে ১৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র পদে নৌকা প্রতীকের পাশাপাশি স্বতন্ত্রে বিএনপি ও বিদ্রোহী হিসেবে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী মাঠে রয়েছে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান মেয়র মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামালের পাশাপাশি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক একেএম আমানুল কাদির টুল্লু নারিকেল গাছ প্রতীকে, উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক ছেলিমুল হক সালাম জগ প্রতীক নিয়ে এবং যুবলীগ কর্মী ইমতিয়াজ আহমেদ শিপন মোবাইল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ দিকে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দলটির উপজেলা শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক ইমরান হাসান সামাদ নিপুণ। অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রেল ইঞ্জিন প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন উদ্ভাবক আব্দুল্লাহ আল সাঈদ।
গতকাল শনিবার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, নৌকা আর কম্পিউটারের মধ্যে মূল লড়াই হবে।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমাদের পৌরসভা আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক। তা ছাড়া দলের সবাই দলীয় প্রার্থীর পক্ষে খুব জোরেশোরে মাঠে নেমেছেন। নির্বাচনে নৌকাই জিতবে।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপি নেতা ইমরান হাসান সামাদ নিপুণ বলেন, ‘দীর্ঘদিন নির্বাচন বন্ধ রেখে জবরদস্তি করা হয়েছে। নানা জায়গায় আমার কর্মী-সমর্থকদেরকে হয়রানি করা হচ্ছে ও প্রচারে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনে জনগণ কম্পিউটার প্রতীকে ভোট দিয়ে তার সমুচিত জবাব দেবেন।’ তিনি আরও বলেন, আমি আমার জয় নিয়ে শতভাগ আশাবাদী। তবে নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে আমার সংশয় রয়েছে। আশা করি দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন কর্মকর্তারা সততার সঙ্গে তাঁদের দায়িত্ব পালন করবেন।’
এদিকে জয় ছাড়া আর কিছুই ভাবছেন না নৌকার প্রার্থী মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল। তিনি বলেন, ‘পৌরবাসী শান্তি প্রিয়। শান্তি, স্বস্তি ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ভোটারা আমাকেই বেছে নিবেন।
ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও পৌর নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা অপূর্ব বিশ্বাস বলেন, ‘২১ বছর পর ২৫ হাজার ভোটারের এ পৌরসভার নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে প্রার্থীদের মধ্যে বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখতে পাচ্ছি। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আমরা সংশ্লিষ্টরা প্রস্তুত আছি।’
২০০১ সালের ঝিকরগাছা পৌরসভার প্রথম এবং শেষ নির্বাচন হয়। দ্বিতীয় বারের মতো ১৬ জানুয়ারি এ পৌরসভার নির্বাচনের ভোট গ্রহন হতে যাচ্ছে।