হাওরাঞ্চলের একমাত্র ফসল বোরো ধান। হাওর-অধ্যুষিত সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে পুরোদমে চলছে বোরো ধানের আবাদ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জামালগঞ্জ উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি বছর ২৪ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।
উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের উত্তর কামলাবাজ গ্রামের কৃষক আ. সাত্তার জানান, এই অঞ্চলের মানুষ বছরের খোরাক (চাল) নিশ্চিত করতে বোরো ধান আবাদ করেন। হাওরাঞ্চলে শুধু বোরো ধানের আবাদ হয়। পাশাপাশি মাঠগুলোতে সব ধরনের শাকসবজির আবাদও হয়।
উপজেলার আলীপুর গ্রামের কৃষক মো. শামছু মিয়া বলেন, ‘দুই একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছি। এবার আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। ভালো জাতের ধানের চারাও রোপণ করেছি। আশা করছি ফলন ভালো হবে। তা ছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছে।’
শামছু মিয়া আরও জানান, তিনি বিষমুক্ত ধানের আবাদ করেছেন। তাঁর তিন সদস্যের পরিবারের সারা বছরের খোরাক রেখেও প্রায় লাখ টাকার ধান বিক্রি করতে পারবেন।
পাগনার হাওরের কৃষক শাহজাহান বলেন, ‘৯০ শতাংশ জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছি। প্রতি ৩০ শতাংশে ১৮ থেকে ২০ মণ ফলনের আশা করছি। প্রতি ৩০ শতাংশে খরচ হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা। ৯০ শতাংশে মোট খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। ধান পাব প্রায় ৬০ মণ। প্রতি মণ ধান ৬০০ টাকা হিসেবে ধরলে আশা করি প্রায় ৩৫ হাজার টাকার ধান পাব।’
উপজেলা হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক অঞ্জন পুরকায়স্থ বলেন, এ বছর হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজগুলো গত বছরের তুলনায় বেশ ভালো হয়েছে। তা ছাড়া সঠিক সময়ে হাওর থেকে পানি নিষ্কাশন হওয়ায় তাড়াতাড়ি ধান চাষ করতে পেরেছেন কৃষকেরা। আবহাওয়া এখনো অনুকূলে আছে। চলতি বছর শিলাবৃষ্টি ও পোকার আক্রমণে যদি না পড়ে তাহলে ধানের ভালো ফলন হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘বোরো ধান আবাদে কৃষক সচেতন হলে কম খরচে অধিক ফলন পাওয়া সম্ভব। এখনো প্রকৃতি অনুকূলে আছে, আশা করছি চলতি বছর বোরো ধানের ফলন ভালো হবে। কৃষকেরাও লাভবান হবেন।’