ঘড়ির কাঁটায় দুপুর ১২টা পেরিয়েছে। যক্ষ্মা নির্ণয় ও চিকিৎসা কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষ। কিন্তু কক্ষ দুটিতে তালা ঝুলিয়ে মিটিংয়ে রয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
গতকাল শনিবার মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরোনো ভবনের নিজ তলায় এই অবস্থা দেখে গেছে। এভাবে নতুন ভবনের দ্বিতীয়তলায় বহির্বিভাগে গিয়েও প্রতিটি চিকিৎসকের কক্ষই ফাঁকা দেখা যায়। কক্ষের সামনে হাসপাতালের টিকিট ও রোগ পরীক্ষার কাগজ হাতে নিয়ে চিকিৎসক ফেরার অপেক্ষায় আছেন দাঁড়িয়ে আছেন প্রায় অর্ধশত মানুষ।
বহির্বিভাগের ২১২ নম্বর কক্ষের সামনে পায়ে ক্ষত নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন উথলী কাতরাসীন গ্রামের হান্নান। তাঁর সঙ্গে বেশ কয়েকজন রোগী বলেন, প্রায় এক ঘণ্টা কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন, কিন্তু ডাক্তারের দেখা পাননি।
জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাসিক সভা ডাকেন শনিবার দুপুর ১২টায়। সভাটি চলে বেলা দেড়টা পর্যন্ত। এ সময় সেবা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর সেবা না নিয়ে ফিরে গেছেন অনেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কয়েকজন স্টাফ বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফজলে রাব্বীর খামখেয়ালিপনা এটি। তাঁর সিদ্ধান্তেই রোগীরা হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। এই সভা দুপুরের পরও করতে পারতেন।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী বলেন, ‘অফিস টাইমেই মিটিং করার কথা। এতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এ ছাড়া দপ্তরগুলোয় তো লোক থাকার কথা।’
মানিকগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, ‘হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যবহৃত করে কোনো মিটিং করার সুযোগ নাই। নিজেদের কোনো কাজের কারণে রোগীদের দুর্ভোগ, এটা কারও কাম্য হতে পারে না। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।’