নুরুল আমিন হাসান, উত্তরা (ঢাকা)
রাজধানীর উত্তরার ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথে মো. শরিফ উল্লাহ (৪৪) নামের এক ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আব্দুস সামাদ (৩৮) নামের একজন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। থানা-পুলিশ বলছে, ছিনতাইকারী একাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তবে স্বজনদের দাবি, নিহত ব্যবসায়ীর পালিয়ে যাওয়া বন্ধুরাও হত্যাকাণ্ডে জড়িত।
উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের সোনারগাঁও জনপথ রোডের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথে গত ১১ আগস্ট রাত পৌনে ১টার দিকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় শরিফের ভাই আনোয়ার হোসেন হত্যা মামলা করেন।
বেশ কয়েকটি সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ‘রাত ১০টা ৪০ মিনিটে ব্যবসায়ী শরিফ তাঁর তিন বন্ধু উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের সোনারগাঁও জনপথ রোডের ৪০ নম্বর ভবনের সপ্তম তলার নেস্ট বারে যান। ওইদিন রাত ১২টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত তাঁরা বারে অবস্থান করেন। বার থেকে বের হয়ে সাদা রঙের একটি প্রাইভেট কারে ওঠেন তাঁরা। রাত ১২টা ৪৩ মিনিটে উত্তরার জনপথ মোড়ের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের একটি বুথের সামনে প্রাইভেট কারটি থামে। গাড়ি থেকে শরিফ নেমে বুথে প্রবেশ করেন। টাকা ওঠানোর সময় একজন রিকশায় এসে বুথের ভেতরে ঢুকে শরিফকে ছুরিকাঘাত করে।’
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, শরিফ গাড়ি থেকে নামার মিনিটখানেক পর আরেক বন্ধু গাড়ি থেকে নেমে আশপাশে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছিলেন। অপর দুই বন্ধু গাড়ি থেকে নেমে পায়চারি করছিলেন। ততক্ষণে রাত ১২টা ৪৮ মিনিটে বুথের ভেতর শরিফ লুটিয়ে পড়েন। আশপাশের লোকজন ধাওয়া করে হামলাকারী আব্দুস সামাদকে আটক করলেও বন্ধুদের ভূমিকা ছিল সন্দেহজনক। তাঁরা গুরুতর আহত অবস্থায় শরিফকে দেখেও কোনো সহযোগিতা না করেই ওই প্রাইভেট কারে পালিয়ে যান।
নিহত ব্যবসায়ী শরিফের স্ত্রী রিয়ানুর পারভিন পলি বলেন, ‘এটি পরিকল্পিত হত্যা। তাঁকে হাসপাতালে না নিয়ে বন্ধুরা পালিয়ে গেছে কেন? এ বিষয়ে অবশ্যই তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’
তদন্তের বরাত দিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দিন নিহত ব্যক্তি ও তাঁর বন্ধুরা বিভিন্ন জায়গায় আড্ডা দিয়েছিলেন। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এমন কোনো তথ্যও আমরা পাইনি। নিহতের বন্ধুদের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে।’
নিহত ব্যবসায়ীর স্বজন ও থানা-পুলিশ জানিয়েছে, হত্যা মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।