সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় এবার পাটের ফলন কম হয়েছে। আবার যা-ও হয়েছে; বাজারে আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন না যশোরের ঝিকরগাছার পাটচাষিরা। বেশির ভাগ চাষিরই লোকসান হয়েছে। কারও লাভ বলতে খড়ি (পাটকাঠি)। আর তাই ক্ষোভে, দুঃখে একজন বলেই বসেন, ‘ভবিষ্যতে আর কোনো দিন আমি পাট চাষ করব না।’
কৃষি অধিদপ্তরের উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ঝিকরগাছায় ৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়। কিন্তু সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় ফলন হয়েছে ৮ হাজার ৬৬২ টন। এর মধ্যে আবার অনাবৃষ্টির কারণে সেচ ও অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়েছে। এ ছাড়া বীজ, সার, জাগ দেওয়া ও আঁশ ছাড়ানোয়ও খরচ অনেক বেশি পড়েছে।
উপজেলার বোধখানা গ্রামের দক্ষিণপাড়ার বর্গাচাষি আবু কালাম বলেন, ‘এ বছর পাঁচ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে পাট চাষ করি। কিন্তু আশানুরূপ দাম না থাকায় বিক্রি করতে পারছি না। এদিকে বাজারে দিন দিন দাম কমছে। এভাবে দাম কমলে অনেক লোকসান গুনতে হবে। কেননা এতে চাষের খরচই উঠবে না।’
আবু কালাম আরও বলেন, ‘পরিচর্যা, বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ, জাগ দেওয়া, ধোয়া, পরিবহন—সবকিছু মিলিয়ে খরচ অনেক বেশি। পাঁচ বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে লাখ টাকার ওপরে। ফলন পেয়েছি ৬০ মণ। দুদিন আগে ব্যাপারী প্রতি মণ পাটের দাম ১ হাজার ৫৫০ টাকা বলেছে। তাতে বিঘায় লোকসান হবে প্রায় ১০ হাজার টাকা। না পারি বেচতে, না পারি ঘরে রাখতে। এখন পাট আমার গলার ফাঁস হয়েছে।’
শুধু আবু কালামের নয়, দাম না থাকায় সোনালি আঁশখ্যাত পাট এবার উপজেলার কমবেশি সব চাষির গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে দিন দিন দাম কমতে
থাকায় পাট ব্যবসায়ীদেরও লোকসান গুনতে হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, এ বছর অনাবৃষ্টির কারণে পাট চাষে খরচ বেড়েছে। কিন্তু দাম আশানুরূপ না হওয়ায় কৃষকের লোকসান হচ্ছে।