আজ ‘লাভ পার্টনার’ নাটকটি প্রচার হবে। সেটি নিয়ে বলুন।
এটা কমেডি কনটেন্ট হলেও ভালো কিছু মেসেজ আছে। নারী সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক রাবেয়া চরিত্রে দেখা যাবে আমাকে। জীবনের নানা সমস্যার কারণে অটোরিকশা চালায় সে। একদিন তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় প্রিন্সের। সমাজকর্মীর মুখোশ পরে স্মাগলিং করে প্রিন্স। পরিচয় থেকে একে অপরের প্রতি ভালোবাসা জন্ম নেয় তাদের। প্রিন্স চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিলয় আলমগীর।
এর আগে কখনো অটোরিকশা চালানোর অভিজ্ঞতা হয়েছে?
এর আগে কখনোই অটোরিকশা চালাইনি, চালাতেও জানতাম না। একেবারেই নতুন এক অভিজ্ঞতা।
কতটুকু চ্যালেঞ্জিং ছিল?
এই নাটকের কয়েকটা দৃশ্যে পেছন থেকে ক্যামেরা সেট করে আমাকে একা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তখন কিছুটা ভয় পেয়েছিলাম। এ ছাড়া একটি দৃশ্য ছিল, যেখানে একটি ছেলে কটু কথা বলার পর অটোরিকশা থেকে নেমে সেই ছেলের সঙ্গে মারপিট শুরু করি। ক্যামেরা অনেক দূরে থাকায় সাধারণ মানুষ বুঝতে পারেনি শুটিং চলছে। অনেকেই আমাকে নানা মন্তব্য করছিল। রাস্তায় ভিড় জমে গিয়েছিল। নির্মাতাও এমন রিয়েলিস্টিক দৃশ্যই চাচ্ছিলেন। সব মিলিয়ে একেবারেই ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা হয়েছে।
দীর্ঘদিন নিলয় আলমগীরের সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করছেন। আপনাদের এই জার্নিটা নিয়ে বলুন।
২০১৬ সালে নিলয় ভাইয়ের সঙ্গে আমার প্রথম কাজ। ১২০টির মতো নাটকে কাজ করা হয়ে গেছে। নিয়মিত কাজ করতে করতে এখন প্রতিদিনের রুটিন মনে হয়। কাজের ক্ষেত্রে তাঁর কাছ থেকে সহায়তা পাই। এই নাটকেও অটোরিকশা চালানো শিখতে নিলয় ভাই হেল্প করেছেন।
একই শিল্পীর সঙ্গে কাজ করতে করতে কখনো কি বিরক্ত লাগে?
এমন না যে সব নাটকে নিলয় ভাই আমার সহশিল্পী থাকছেন। তাঁর সঙ্গে কাজ বেশি হচ্ছে এটা ঠিক, তবে অন্যদের সঙ্গেও কাজ করছি। আর প্রতি নাটকেই ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছি। সেটে মজা করার পাশাপাশি কোনো কোনো দৃশ্যের ইম্প্রোভাইজেশন নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হয় নিলয় ভাইয়ের সঙ্গে। এই মান-অভিমান বেশি সময় থাকে না। তবে বিরক্তি আসেনি কখনো।
কখনো কি মনে হয় একই রকম গল্প আর চরিত্র রিপিট করছেন?
যখন একটা কাজ হিট হয় তখন নির্মাতাদের মাথায় সেই কাজটা ঢুকে থাকে। আমার যে চরিত্রটি দর্শক পছন্দ করল, সেই ধরনের প্রস্তাব বারবার আসতে থাকে। আমার জায়গা থেকে চেষ্টা করি ভিন্নতা বজায় রাখতে। প্রতিবার শুটিং শুরুর আগে স্ক্রিপ্ট নিয়ে কয়েকবার বসার চেষ্টা করি, যাতে আগের কোনো নাটকের সঙ্গে মিলে না যায়। প্রয়োজনে আমার পরামর্শ জানাই। কখনো যদি মনে হয়, আগের নাটকের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে, তখন সেটা নির্মাতাকে জানাই।
জি ফাইভের জন্য ‘রূপকথা নয়’ নামে একটি সিরিজে অভিনয় করেছি। এরপর আর কোনো ওটিটিতে কাজ করা হয়নি। নিয়মিত না হওয়ার একটা কারণ হলো, ওটিটির অফার সেভাবে না পাওয়া। আরেকটা কারণ হচ্ছে, রূপকথা নয় সিরিজে অভিনয় করার সময় আমাকে বলা হয় ওটিটি যেহেতু টাকা দিয়ে সাবস্ক্রিপশন করে দেখতে হয়, তাই নাটকের কাজ কমিয়ে ওটিটিতে ফোকাস দাও। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, এখন আমার শেখার সময়, এক্সপেরিমেন্ট করার সময়। যত বেশি কাজ করব, তত বেশি শিখব। তাই টিভিসি ও ওভিসির দিকেই মনোযোগ দিচ্ছি। আরও অভিজ্ঞতা নিয়ে ওটিটি ও সিনেমা নিয়ে চিন্তা করব।
এ বছর গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করেছেন। পড়ালেখা নিয়ে কী পরিকল্পনা?
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিংয়ে স্নাতক শেষ করেছি। পরিকল্পনা আছে দেশের বাইরে মাস্টার্স করার। তবে এখন শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সময় নিচ্ছি। ইচ্ছা আছে দুই বছর পর মাস্টার্স করতে দেশের বাইরে যাব।
প্রেম করছেন কারও সঙ্গে?
প্রেম-ভালোবাসায় আমি নেই। একটি রিলেশনের মধ্যে থাকলে সময় দিতে হয়, আলাদা অ্যাফোর্ট দিতে হয়। সেই সময়টা তো থাকতে হবে। আরেকটা বিষয় হলো, চাইলে তো একটা মানুষ প্রেম করতে পারে না। প্রেম আসলে হয়ে যায়। তেমন কিছু এখনো আমার জীবনে হয়নি। সারাক্ষণ কাজের মধ্যে থাকি। যখন বাসায় ফিরি তখন পরিবারের সদস্যদের সময় দিই। এ ছাড়া যখন ফ্রি থাকি তখন রাস্তার কুকুর ও বিড়ালদের খাওয়ানো, ট্রিটমেন্ট করার চেষ্টা করি।
এই বিষয়গুলোতে আমি খুব আনন্দ পাই। আর আমি তো এখনো অনেক ছোট, তাই বিয়ে নিয়ে ভাবনা শুরু হয়নি।