হোম > ছাপা সংস্করণ

ঢাকায় উচ্ছেদ অভিযান, গাজীপুরে দখল

রাতুল মণ্ডল, (শ্রীপুর) গাজীপুর

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম মেয়র থাকাকালে নগরীর দখল হওয়া নদ-নদী, খাল, জলাশয় রক্ষায় তাঁর অভিযানের বিষয়ে প্রায়ই গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হতো। সেই আতিকুলের বিরুদ্ধে এবার উঠেছে নদ দখলের অভিযোগ

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী লবলঙ্গ নদ দখল করে খামারবাড়িসহ নানা স্থাপনা গড়ে তুলেছেন আতিকুল ইসলাম। দখল-দূষণের কারণে অস্তিত্ব সংকটে পড়া লবলঙ্গে শেষ থাবা বসিয়েছেন তিনি। নদটি দখলের বিষয়ে ইতিমধ্যে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) অবহিত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। 

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রীপুর উপজেলা সদরের বুক চিরে বয়ে চলা লবলঙ্গ নদের বেশির ভাগ অংশ দখল আর দূষণের কারণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। সর্বশেষ দখলদারের খাতায় নাম উঠেছে সাবেক মেয়র আতিকুলের। ২০০৮ সালে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ধনুয়া মৌজায় ২০০ বিঘা কৃষিজমি কিনে গড়ে তুলেছেন বিশাল এক খামারবাড়ি। কেনা জমির পাশাপাশি খামারবাড়ি তৈরিতে দখল করা হয়েছে লবলঙ্গ নদের বিশাল একটি অংশ। সাবেক মেয়রের গড়া প্রকল্পের দুই পাশে লবলঙ্গের অস্তিত্ব থাকলেও খামারবাড়ির অংশে এর অস্তিত্ব বিলীন। তবে এর সামান্য অংশ ফাঁকা রেখে তৈরি করেছেন কাঠের সেতু।

সরেজমিনে দেখা যায়, খামারবাড়ির পাশাপাশি লবলঙ্গ দখল করে গড়ে তুলেছেন আরও বিভিন্ন স্থাপনা। আতিকুলের গড়া এই প্রকল্পে এসে বোঝার উপায় নেই, এই খামারবাড়ির মাঝখান দিয়ে একটি নদ বয়ে গেছে। তবে খামারের দুই পাশে এর অস্তিত্ব এখনো দৃশ্যমান। খামারবাড়িতে কৃষিজমি ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল ছোট-বড় কটেজ। ছোট-বড় মিলিয়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি পুকুর। পুকুরগুলোর ঘাট পাকা করা। অর্ধশতাধিক শেডে রয়েছে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগির খামার। আছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির পাখিও।

লবলঙ্গপারের বাসিন্দা নূরু হোসেন বলেন, ‘লবলঙ্গ তো আমার জন্মের পর থেকে দেখে আসছি। বাপ-দাদার মুখে এই নদের গল্প শুনে বড় হয়েছি। হঠাৎ করে আতিক সাহেব প্রজেক্টের নামে এর বিশাল অংশ জবরদখল করেছেন।’ 

স্থানীয় বাসিন্দা চানু মিয়া বলেন, ‘ছোটবেলা এই নদে সাঁতার কাটতাম। ধীরে ধীরে সেটি খালে পরিণত হলো চোখের সামনে। ২০০৮ সালের দিকে আতিকুল ইসলাম জমি কেনা শুরু করেন। প্রথমে উঁচু জমি, এরপর কৃষিজমি কেনেন তিনি। পরে হঠাৎ করেই লবলঙ্গ নদের অংশসহ কৃষিজমি বালু দিয়ে ভরাট করেন।’ 

আতিকুলের গড়া প্রকল্পের দায়িত্ব থাকা বাবুল মিয়া বলেন, ‘মেয়র সাহেব স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছেন। লবলঙ্গ আমাদের প্রজেক্টের ভেতর নেই। আতিক সাহেব লবলঙ্গ জবরদখল করেননি।’

নদী পরিব্রাজক দল শ্রীপুর শাখার সভাপতি সাঈদ চৌধুরী আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘দখল আর দূষণের কারণে লবলঙ্গ আজ অস্তিত্ব সংকটে। ঠিক সেই মুহূর্তে শেষ থাবা বসালেন সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম। এখন তো নদীর অস্তিত্বই নেই।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতাহার শাকিল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লবলঙ্গ দখল করে সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামের প্রকল্পের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ফোন করে আমাকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে লবলঙ্গ মুক্ত করা হবে।’

আরও খবর পড়ুন:

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন