নওগাঁর মান্দায় যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন চালিয়ে হাফিজা খাতুন (২৬) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের মরদেহ মান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন।
হাফিজা খাতুন বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের হুলিবাড়ী গ্রামের আকাশ হোসেনের স্ত্রী ও কালিকাপুর গ্রামের ছামসুল আলমের মেয়ে। মাত্র তিন মাস আগে আকাশ হোসেনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। এ ঘটনায় হাফিজা খাতুনের স্বামী আকাশ হোসেন (২২) ও শ্বশুর ইয়াছিন আলীকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহতের বাবা ছামসুল আলম জানান, তিন মাস আগে পারিবারিকভাবে মেয়ে হাফিজাকে হুলিবাড়ী গ্রামের আকাশ হোসেনের সঙ্গে বিয়ে দেন। এটি ছিল হাফিজার দ্বিতীয় বিয়ে। এ সময় জামাই আকাশকে মোটা অঙ্কের যৌতুক দেওয়া হয়। কিন্তু বিয়ের কয়েক দিন পর থেকে আরও দুই লাখ টাকার দাবিতে মেয়ের ওপর নির্যাতন শুরু করেন জামাই ও তাঁর পরিবারের লোকজন।
ছামসুল আলম আরও জানান, গত শুক্রবার একই দাবিতে মেয়েকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দেন স্থানীয়রা। গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মোবাইল ফোনে জানতে পারেন মেয়ে হাফিজা খুব অসুস্থ, হাসপাতালে নিতে হবে। সংবাদ পেয়ে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান। পরে উদ্ধার করে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। যৌতুকের দাবিতে তাঁর মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি ছামসুলের।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, ‘যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার অভিযোগ এনে নিহতের বাবা থানায় মামলা করেছেন। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ফলাফল পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী আকাশ হোসেন ও শ্বশুর ইয়াছিন আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’