রাজবাড়ী প্রতিনিধি
অর্থসংকটে রাজবাড়ীর পৌর শিশু হাসপাতালটি গত পাঁচ বছর বন্ধ। এতে নবজাতকসহ শিশু রোগীদের চিকিৎসাসেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
তবে দ্রুতই অর্থ জোগাড় করে আবারও হাসপাতালটি চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজবাড়ী পৌর মেয়র।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি সড়কের শহরের নতুন বাজার এলাকায় ১৯৯৫ সালে পৌর শিশু হাসপাতালটি স্থাপিত হয়। শুরু থেকে পৌরসভার অর্থায়নে একজন শিশু চিকিৎসক ও দুজন সহকারী দিয়ে হাসপাতালটি পরিচালিত হতো। সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যতীত স্বল্পমূল্যে হাসপাতালে শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হতো। এভাবেই চলেছে ২৩ বছর। সর্বশেষ হাসপাতালটির চিকিৎসক ছিলেন আব্দুর রশিদ। তিনি ২০১৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর অবসরে যান। তখন পৌরসভার আর্থিক সংকট দেখিয়ে নতুন কোনো চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তারপর থেকে হাসপাতালটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌর শহরের নতুন বাজার এলাকায় হাসপাতালের প্রবেশপথে বেশ কিছু গাছের গুঁড়ি রাখা হয়েছে। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার কারণে চার কক্ষের হাসপাতালটি বর্তমানে পরিত্যক্ত ভবনে পরিণত হয়েছে। হাসপাতাল ভবনের চারটি কক্ষে তালা দেওয়া। ভবনের মূল প্রবেশপথ খোলা রয়েছে। হাসপাতালের লাইটগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। ময়লা আবর্জনা আর আগাছায় ভরে গেছে হাসপাতালের চারদিক।
স্থানীয় বাসিন্দা রকিব বলেন, গত পাঁচ বছর হাসপাতালটি বন্ধ রয়েছে। শুধু সপ্তাহে এক দিন পৌরসভা থেকে টিকা দিতে আসেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে ময়লা আবর্জনা আর দুর্গন্ধের কারণে টিকা প্রদানকারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
আল-আমিন বলেন, ‘জেলার একমাত্র শিশু হাসপাতাল বন্ধ থাকার কারণে ভোগান্তিতে রয়েছেন শিশু রোগীদের অভিভাবকেরা। আর্থিকভাবে সচ্ছল পরিবারগুলো তাদের শিশুসন্তানদের অন্য হাসপাতালে শিশু ডাক্তার দেখাতে পারেন। কিন্তু আমাদের মতো নিম্ন আয়ের পরিবারের অভিভাবকদের বিপাকে পড়তে হয়। তাই জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালটি চালুর দাবি করছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস ছালাম বলেন, হাসপাতালটি চালু থাকা অবস্থায় চিকিৎসার জন্য শিশু রোগীদের ভিড় দেখা যেত। কিন্তু এখন সেই সুযোগ নেই। সদর হাসপাতালই এখন সবার একমাত্র ভরসার জায়গা। কিন্তু সেখানে শিশুদের জন্য ভালো মানের চিকিৎসক নেই। এ জন্য পৌর শিশু হাসপাতালটি চালু করা খুবই জরুরি।
রাজবাড়ী পৌর মেয়র আলমগীর শেখ তিতু বলেন, ‘আমার আগের মেয়র সাহেব হাসপাতালটি বন্ধ করে দেন। আমি পৌরবাসীকে কথা দিয়েছি হাসপাতাল চালু করব। এ জন্য বিষয়টি নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। দ্রুতই অর্থের ব্যবস্থা হবে। তখন নতুন করে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। আশা করছি, খুব শিগগিরই হাসপাতালটি চালু করা হবে।’