পাবনা সদর উপজেলার ভবানীপুরে পদ্মা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন শতাধিক জেলে। তাঁরা এখন নদীতে মাছ ধরতে গেলে চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মৎস্যজীবী সমিতির নেতাদের জলমহালে জেলেরা মাছ শিকার করছেন দাবি করে তাঁদের কাছ থেকে টাকা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জেলেদের পক্ষে শাহাদাৎ প্রামাণিক বাদী হয়ে ১৪ আগস্ট পাবনা আমলি আদালত-১-এ অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তিনি বলেন, গত ২৮ জুলাই বাঁশেরবাদা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন আলী ও সদস্য খাদেমুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল লোক তাঁর কাছ থেকে মাছ বিক্রির সাড়ে ৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। একই দিন রাতে মামলার সাক্ষী আরও ৬ জন জেলের কাছ থেকে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা এবং মাছ ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সমিতির সদস্য খাদেমুল ইসলাম জানান, এটি মূল পদ্মা নদী নয়। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন বাঁশেরবাদা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিনের নামে জয়েনপুর মৌজার জলমহাল ইজারা দিয়েছে। এটা সেই জলমহালের অংশ।
খাদেমুল ইসলামের মতে, জলমহালের এ অংশে ইজারার টাকা পরিশোধের জন্য জেলেদের কাছে টাকা চাওয়া হয়। তাঁরা তা না দিয়ে জোর করে জলাশয়ে মাছ ধরছেন।
তবে মৎস্যজীবীদের দাবি, জয়েনপুর মৌজা ঈশ্বরদী উপজেলার অন্তর্গত। তাঁরা ইজারার জায়গা ছেড়ে নদীতে মাছ ধরতে জেলেদের বাধা দিচ্ছেন।
ভবানীপুর গ্রামের মৎস্যজীবী শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘সদর উপজেলার ভবানীপুর, ভগীরতপুর ও রতনপুর গ্রামের শতাধিক মৎস্যজীবী প্রতিদিন নদী থেকে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করছেন অথচ ইজারার কথা বলে জোর করে টাকা আদায় করা হচ্ছে।’
ইজারা গ্রহীতা আলাউদ্দিন আলী বলেন, সরকারি নিয়ম মেনেই নদীর কূল ও জলমহাল ইজারা নেওয়া হয়েছে। জেলেরা টাকা না দিলে ইজারার টাকা পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে। তিনি আরও বলেন, এখানে জেলেদের নামে প্রকৃত জেলে নন, এমন লোকজন মাছ ধরছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাবনা জেলা প্রশাসনের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) নাজমুস সাদাত রত্ন বলেন, ‘প্রবহমান নদী বা নদীর কূল ইজারা দেওয়া হয়নি। যদি না তা জলমহাল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। যখন কাউকে জলমহাল ইজারা দেওয়া হয়, তখন চুক্তিতে চৌহদ্দি উল্লেখ করা থাকে। চাইলেই ইজারার কাগজ দেখিয়ে যেকোনো জায়গায় খাজনা নেওয়া যায় না। তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায়নি। খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখব।’