সেলিনা আক্তার ময়মনসিংহের ত্রিশাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র নার্স (সেবিকা)। তিনি গত ৩০ বছরে প্রায় ১০ হাজার প্রসূতির নরমাল ডেলিভারি (স্বাভাবিক প্রসব) করেছেন।
আজ বিশ্ব নার্স দিবস। নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে এ দিবসটি পালন করা হবে। এ দিবস সামনে রেখেই সেলিনা হোসেনের সেবার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
জানা গেছে, সেলিনা আক্তারের সেবাদান এখানকার সবার মুখে মুখে আলোচিত। নরম মেজাজের এ সেবিকা করোনাকালে সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। করোনার সময় যখন মৃত্যুর ভয়ে কেউ ঘর থেকে বের হতে চাননি, তখন তিনি করোনা প্রতিরোধক টিকা নিয়ে ছুটেছেন। স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরও দিয়েছেন টিকা।
এই হাসপাতালে নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা নেওয়া হোসনে আরা বলেন, ‘এই হাসপাতালে সেলিনা আপার পুত্রবধূ শাহিদা আক্তারও নার্স হিসেবে কাজ করছেন। তারা আমাদের ভরসারস্থল। পরিবারের যেকোনো সমস্যায় চিকিৎসা নিতে এলে তাঁদের আন্তরিকতা ও সেবার মানসিকতা মুগ্ধ করে।’
ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সিং সুপারভাইজার মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান জানান, সেলিনা আক্তার সিনিয়র স্টাফ নার্স। মিডওয়াইফ দায়িত্ব পাওয়ার আগে উনাদের দ্বারাই ডেলিভারি সম্পন্ন হতো। সে সময় উনিই বেশির ভাগ ডেলিভারি করাতেন। বর্তমানে এ হাসপাতালে মাসে গড়ে ৯০ থেকে ১০০টি ডেলিভারি হচ্ছে। এর প্রায় ৮০ শতাংশই নরমাল ডেলিভারি। দীর্ঘ এই সময়ে সেলিনা আক্তার অন্তত ১০ হাজার ডেলিভারি করিয়েছেন।
সিনিয়র স্টাফ নার্স সেলিনা আক্তার বলেন, ‘মানুষকে সেবা দিতে আমার অনেক ভালো লাগে। কী পেলাম, না পেলাম এটা কোনো বিষয় নয়। চাকরিজীবনের পুরুটাই মানুষকে সেবা দিয়েছি। আর দুই বছর চাকরির সময় আছে। সে সময়টাও আল্লাহ যদি সুস্থ রাখেন মানুষের সেবা করেই যাব। সবার কাছে সুস্থতার জন্য দোয়া চাই।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার হাসপাতালে সেলিনা আক্তার সিনিয়র নার্স। তিনি হাসিমুখে সব কাজ সময়মতো করে থাকেন। নরমাল ডেলিভারিতে তিনি একজন আদর্শ নার্স হয়ে উঠেছেন।’