খায়রুল বাসার নির্ঝর
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মুক্তি পাচ্ছে ‘হডসনের বন্দুক’। কেমন অনুভূতি হচ্ছে?
এটা অনেক আগের কাজ। শুটিং করেছি ২০১৪ সালে আর ডাবিং শেষ করেছি ২০১৬ সালে। অনেক দিন আটকে থাকার পর অবশেষে আলোর মুখ দেখছে সিনেমাটি। আমরা তো আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। দেরি হলেও প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে, এতে খুব খুশি। অনেক শুভকামনা সিনেমাটির জন্য। বিশেষ করে নির্মাতা প্রশান্ত অধিকারীর জন্য। এই সিনেমার জন্য অনেক কষ্ট করেছেন তিনি। হাল ছেড়ে না দিয়ে যুদ্ধটা করে গেছেন বলেই ফল পাচ্ছেন।
আপনার অভিনীত ‘না মানুষ’ সিনেমাটিও আটকে আছে। এটিও আপনার ক্যারিয়ারের প্রথম দিকের কাজ। সিনেমা মুক্তি না পাওয়ায় মানসিক প্রভাব পড়েছিল কি না ?
‘না মানুষ’ যখন আটকে গেল, তখন মানসিকভাবে একেবারে ভেঙে পড়েছিলাম। এটি আমার প্রথম সিনেমা আর প্রথম সিনেমার প্রতি সবার আলাদা মায়া কাজ করে। এখনও ‘না মানুষ’-এর কথা উঠলে কান্না আসে আমার।
এখন কোন সিনেমার কাজ করছেন?
গত ২৭ নভেম্বর থেকে ‘যাপিত জীবন’ সিনেমার কাজ করছি। সরকারি অনুদানে সিনেমাটি বানাচ্ছেন হাবিবুল ইসলাম হাবিব। ভাষা আন্দোলনের সময়কার গল্প নিয়ে তৈরি হচ্ছে সিনেমাটি।
এতে আপনাকে কোন চরিত্রে দেখা যাবে?
গল্পই হচ্ছে এই সিনেমার প্রধান চরিত্র। যে চরিত্রটি স্বল্প সময়ের জন্য থাকছে, সেটিও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই সিনেমায় আফজাল ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করছি। তাঁর মতো কিংবদন্তির সঙ্গে কাজ করা নিয়ে আমি ভীষণ উচ্ছ্বসিত। এ ছাড়া রওনাক হাসান, রোকেয়া প্রাচী আপুর সঙ্গে কাজ করার সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইনি।
আফজাল হোসেনের সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?
অসাধারণ। প্রতিনিয়ত শিখছি আর তাঁর প্রতি মুগ্ধতা বাড়ছে। আমি মনে করি, তাঁকে নিয়ে কথা বলার যোগ্যতা আমার হয়নি।
এই দুই সিনেমার বাইরে ‘রঙবাজার’ সিনেমাতেও কাজ করছেন শুনেছি?
আমি কখনই বিশ্বাস করি না অনেক কাজ করতে হবে। আমার কাছের মানুষেরা বিষয়টি জানেন। কিন্তু হুট করেই একসঙ্গে তিন সিনেমায় আমার নাম জড়িয়ে গেছে। তিনটি সিনেমার গল্পই সুন্দর। নারায়ণগঞ্জের টানবাজারের পতিতাপল্লি নিয়ে রঙবাজারের গল্প। ১৯৯৬ সালে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছিল। এই জন্য মামলাও হয়েছিল। ওই সময় একটা আন্দোলন হয়েছিল। ওই আন্দোলনে যিনি লিড দিয়েছিলেন, সেই হাজেরার চরিত্রে অভিনয় করেছি। তিনি ছিলেন বিপ্লবী, কোনো কিছু পরোয়া করেন না। অধিকার আদায়ের জন্য সব করতে পারেন।
ভিউ বাণিজ্যের এই সময়েও বেছে বেছে কাজ করাটা কতখানি চ্যালেঞ্জিং?
আমি ছোটবেলা থেকেই অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এই পর্যন্ত এসেছি। আমি যুদ্ধটা করতে জানি। আমি চাইলেই অনেক কাজ করতে পারতাম। কিন্তু তা না করে ভালো কাজের অপেক্ষায় থাকি। ভিউ বাণিজ্য আসার পর থেকে এই যুদ্ধটা আরও বেড়ে গেছে। শুধু আমি একা নই, অনেকেই এই যুদ্ধে লড়ছেন। এমন নয় যে আমি কখনো ভেঙে পড়িনি। তবে আমি জানি কীভাবে টিকে থাকতে হয়।
ক্যারিয়ার নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
নিজেকে একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আরও অভিনয় শিখতে চাই। আমার অভিনয়ের কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। গ্রাম থেকে এসে নিজের পরিচয় বানিয়েছি। যেভাবে এই পর্যন্ত এসেছি, সেভাবে থাকতে পারলেই মনে হয় নিজেকে প্রমাণ করতে পারব।