পয়লা বৈশাখকে কেন্দ্র করে ধনবাড়ী নওয়াব ইনস্টিটিউশন মাঠে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা বসেছে। সেই মেলায় রাত হলেই বসছে রমরমা জুয়ার আসর। মেলায় আসা বিভিন্ন বয়সী মানুষ অতিরিক্ত টাকার আশায় জুয়ার বোর্ডে অংশ নিচ্ছেন। আর জুয়াড়িদের পাতা ফাঁদে টাকা ঢেলে নিঃস্ব হয়ে ফিরছেন অনেকে। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
সরেজমিন গত বৃহস্পতিবার রাতে দেখা গেছে, মেলায় বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রির জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন বিক্রেতারা। মেলাও চলছে জমজমাট। মেলা উপভোগ করতে এসেছেন আশপাশের কয়েক জেলার মানুষ। মাঠের পশ্চিম পাশে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় সাত থেকে আটটি জুয়ার আসর বসছে। নির্বিঘ্নে চলছে খেলা। রীতিমতো জুয়ার উৎসবে মেতে উঠছে মেলায় আসা নানা বয়সী মানুষ। বেশি আসক্ত হচ্ছেন যুবক ও স্কুল-কলেজের ছাত্ররা। জুয়ার প্রতি বোর্ডে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার খেলা হচ্ছে। আর এসব জুয়া খেলা পাহারা দিচ্ছেন স্থানীয় কিছু লোক।
পাশের উপজেলা থেকে মেলায় আসা হুমায়ুন কবীর ও আসিফ আহমেদ বলেন, মেলাটি একটি পুরোনো ঐতিহ্য। দীর্ঘদিন ধরে ধনবাড়ীতে এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকার লোকজন মেলা দেখতে আসেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। এ সময় এখানে পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের পণ্য। কিন্তু রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় জুয়ার আসর। এটা বন্ধ করা জরুরি। এ ব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেন তাঁরা।
স্থানীয় বাসিন্দা আবেদ মণ্ডল বলেন, ‘নবাবি আমল থেকে এ মেলার যাত্রা শুরু হয়। এখনো চলেছে। তাই এই মেলায় কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড যেন না হয়, সুষ্ঠুভাবে মেলা পরিচালনা করা হোক—এটাই দাবি।’
মেলা উদ্যাপন কমিটির সদস্যসচিব ও পৌর মেয়র মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বকল বলেন, ‘আমাদের অজান্তেই জুয়াড়িরা আসর বসিয়ে ছিল। জানা মাত্রই ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যদি আবার বসায়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে ধনবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. চাঁন মিয়া বলেন, ‘খবর জানার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ পাঠিয়েছি। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জুয়াড়িরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। তাদের বসার স্থানগুলো ভেঙে দেওয়া হয়েছে। মেলাতে কোনোভাবেই জুয়া খেলতে দেওয়া হবে না।’