নওগাঁর ধামইরহাটে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে কৃষি প্রযুক্তি মেলা উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার উপজেলা পরিষদ স্মৃতিসৌধ চত্বরে তিন দিনব্যাপী এ মেলার সমাপনী দিনেও সবার নজর কেড়েছে স্থানীয় সামাজিক সংগঠন ‘মানবসেবা’র সনাতন কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদর্শনী স্টল। মেলায় ঘুরতে আসা বিভিন্ন বয়সের মানুষ এই প্রদর্শনী দেখতে ভিড় করেন।
এ স্টলে নিত্যপ্রয়োজনীয় গৃহস্থালি ও কৃষিকার্যে ব্যবহৃত ৩০-৩৫টি সনাতন কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদর্শন করা হয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বেত দিয়ে তৈরি ধামা, দাঁড়িপাল্লা, কাঠা, বাঁশ ও শালপাতা দিয়ে তৈরি মাথল, গরুর মুখে লাগানো গোমাই, ডিমবাতি, হারিকেন, জাঁতা, কাঠের তৈরি প্রশস্ত ধান মাড়াই পিঁড়া, কৃষিকাজে মাটি চাষের জন্য জোয়াল, লাঙল, বাহক, আঁচড়া (বিদা), মই, খড় মাড়াই কাজে ব্যবহৃত কাঁড়ইল, ধান ভাঙা ঢেঁকি, বাঁশের তৈরি ডালি, চাঙারি, চাল ও ধান ঝাড়ার কুলা, মাটির তৈরি ডাবর (সংরক্ষণ পাত্র) এবং গরুর গাড়ি উল্লেখযোগ্য।
মেলায় ঘুরতে আসা ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আফরোজা খানম জানায়, সনাতন কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদর্শনী স্টল দেখে সে বিস্মিত। সে এই কৃষি যন্ত্রগুলো আগে কখনো দেখেনি।
‘মানবসেবা’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাসেল মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, একসময় গৃহস্থালি ও কৃষিকাজে যেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতেন, আজ তা বিলুপ্তপ্রায়। বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এসব নিদর্শন তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরাই তাঁদের উদ্দেশ্য।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌফিক আল জুবায়ের বলেন, তরুণ প্রজন্ম জানে না, আগে কৃষিকাজে কী ধরনের যন্ত্রপাতির ব্যবহার করতেন কৃষকেরা। বর্তমানে অত্যাধুনিক যন্ত্র কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন এসেছে। কিন্তু আজ থেকে ১০ বছর পর এর প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যাবে। তখন আরও অত্যাধুনিক কিছু আসবে। তাই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের এই যে একটা পরিবর্তন, এই পরিবর্তনটা তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরাটা প্রয়োজন ছিল।