বদরগঞ্জে আট অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজস্ব জমিতে পাকা বাড়ি পাচ্ছেন। অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে বাড়িগুলো নির্মাণ করা হবে। বাড়ি বরাদ্দ পাওয়ায় খুশি মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবার।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তিন শতক জমির ওপর প্রতিটি একতলা বাড়ি নির্মাণে বরাদ্দ থাকছে ১৩ লাখ টাকা। একজন ঠিকাদারের মাধ্যমে বাড়িগুলো নির্মাণ করা হবে।
সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছে। অচিরেই নির্মাণকাজ শুরু হবে। বাড়ি বরাদ্দ পাওয়া আটজনের মধ্যে পাঁচ মুক্তিযোদ্ধা বেঁচে আছেন আর তিনজন মারা গেছেন।
মারা যাওয়া তিন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী বাড়িগুলো পাচ্ছেন। তাঁরা হলেন রাধানগর ইউনিয়নের মণ্ডলপাড়া গ্রামের আকবর আলীর স্ত্রী আরোয়া খাতুন, বেলাল উদ্দিনের স্ত্রী মোহসেনা বেগম ও গোপালপুর শ্যামপুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের স্ত্রী মমিনা।
বাড়ি বরাদ্দ পাওয়া জীবিত মুক্তিযোদ্ধারা হলেন রাধানগর ইউনিয়নের লালদীঘি আরাজী দিলালপুর দেবত্তরপাড়া গ্রামের মোস্তফা সরকার, গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বলদীয়া পাড়া গ্রামের আব্দুল বাছেদ সরকার, খিয়ারপাড়া গ্রামের শরিফ উদ্দিন সরকার, মধুপুর কাজীর হাট গ্রামের মনি চন্দ্র সরকার ও বিষ্ণুপুর চান্দুপাড়া গ্রামের আব্দুল হালিম।
মনি চন্দ্র বলেন, ‘জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। দেশ স্বাধীনের পর থেকে আর্থিক সংকটে কষ্টে দিন পার করে আসছি। এখন পর্যন্ত ভাঙা টিনের বাড়িতে আছি। ভাবছিলাম হয়তো জীবনে ভালো ঘরে থেকে যেতে পারব না। বর্তমান সরকার ঢালাই করা পাকা ঘর বরাদ্দ দিয়েছে আমার নামে। স্রষ্টা আর কিছুদিন বাঁচিয়ে রাখলে পাকা ঘরে থাকতে পাইম। তখনই অস্ত্র হাতে নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়াটা সার্থক হইবে।’
মনি চন্দ্রের ছেলে পতিরাম চন্দ্র বলেন, ‘বাবার খুব শখ পাকা ঘরে থাকার। বর্তমান সরকার তাঁর শখ পূরণ করছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।’
অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার নামে ঘর বরাদ্দ হওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মাহাবুবার রহমান হাবলু বলেন, আরও আগে জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের নামে ঘর বরাদ্দ হলে ভালো হতো।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) বাবুল চন্দ্র রায় বলেন, ঠিকাদারের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের আট বাড়ি নিজস্ব জমিতে নির্মাণকাজ অচিরেই শুরু হবে।