কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সদকী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের মো. সেলিম (৪৫) হত্যাকাণ্ডের পর গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে আসামিসহ প্রতিপক্ষ। ফলে মামলার ২৯ আসামিসহ তাঁদের পক্ষের লোকজন বাড়িছাড়া হওয়ায় খেতে নষ্ট হচ্ছে পাট, সবজিসহ কোটি টাকার ফসল।
এ সুযোগে জনশূন্য ঘরবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে বাদীপক্ষের বিরুদ্ধে।
গতকাল বুধবার সকালে চরপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, চরপাড়া গ্রামে সুনসান পরিবেশ। কয়েকটি মোড়ে পুলিশ ও গ্রাম পুলিশের টহল। অধিকাংশ বাড়িতে নেই মানুষ। মানুষশূন্য ঘরগুলোতে নেই দরজা, জানালাসহ আসবাবপত্র। শূন্য গোয়ালঘরে নেই গৃহপালিত পশু।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেলিম হত্যা মামলার ২৭ নম্বর আসামি হেলাল উদ্দিন। ঘটনার দিন থেকেই তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা পলাতক।
হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী কনা খাতুন বলেন, ‘টিনশেডের আধা পাকা ঘর আমার। ঘরের মালামাল, গরু সব আগেই নিয়ে গেছে প্রতিপক্ষরা। গত সোমবার রাতে ঘরের সব কটি কাঠের দরজা জানালা খুলে নিয়ে গেছে। আমাদের সমর্থকদের প্রায় সব ঘরের একই অবস্থা।’
সদকী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিনহাজুল আবেদীন দ্বীপ বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আসামি পক্ষের ঘরবাড়িতে কিছুই নেই। মালামাল, দরজা, জানালা সব লুটপাট হয়েছে। মাঠে তাঁদের কোটি টাকার ফসল নষ্ট হচ্ছে।’
পুলিশ ও নিহত সেলিমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৬ মে চরপাড়ায় জমি সংক্রান্ত জের ধরে হুমায়ুন মণ্ডল নামের এক যুবককে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। ওই ঘটনায় ৩৬ জনের নামে হত্যা মামলা করা হয়। মামলায় সেলিম আসামি ছিলেন।
হুমায়ুন হত্যার প্রতিশোধ নিতে গত ১ আগস্ট আসামি সেলিমকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। এ ঘটনায় নিহত সেলিমের ভাই শাহীন আলী ২৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলায় গ্রেপ্তার ও হামলার ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে প্রতিপক্ষ।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘পুলিশের দায়িত্ব জান-মালের নিরাপত্তা দেওয়া। কে কি করেছে তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।’