হোম > ছাপা সংস্করণ

কোটিপতি এক পরিবার, সর্বস্বান্ত যুবকেরা

চাঁদপুর প্রতিনিধি

একসময় দরজির কাজ করতেন তিনি। টেনেটুনে চলত তাঁর সংসার। একপর্যায়ে অনলাইনে ক্যাসিনো খেলার ওয়েবসাইটের সন্ধান পেয়ে জড়িয়ে পড়েন জুয়ায়। পরে পরিবারের অন্য সদস্যদেরও এর সঙ্গে যুক্ত করেন। তাঁরা সবাই মিলে জুয়ার ফাঁদে লোকজন ভিড়িয়ে এখন কোটিপতি। তবে স্থানীয় যুবসমাজ হয়েছে সর্বস্বান্ত। 

চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের রালদিয়া গ্রামে জুয়ার এই সিন্ডিকেটের হোতা শওকত গাজী। ‘গ্লোরি ক্যাসিনো’ নামে অনলাইন জুয়ার ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হওয়া চার যুবকের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে। 

রালদিয়া গ্রামে গেলেও অনেকেই সেখানে অনলাইন জুয়া চালুর হোতা হিসেবে শওকত গাজীর নাম বলেন। 

স্থানীয় ব্যবসায়ী জামাল প্রধানিয়া বলেন, ‘শওকত গাজী ঢাকার মিরপুরে দরজির কাজ করতেন। বছর পাঁচেক আগে আমার দোকানে চাল বাকি নিয়ে টাকা দিতে পারেনি। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের কারবারে জড়িয়ে খুব দ্রুত সময়ে কোটি কোটি টাকার মালিক। এলাকায় কোটিপতি আর শিল্পপতি বলে তার পরিচয়।’ 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও অনেকে জানান, শওকত গাজী এখন এলাকায় সবচেয়ে ধনী। অনলাইন ক্যাসিনোতে জড়িত তিনি। 
স্থানীয় বাসিন্দা ও দক্ষিণ রালদিয়া জামে মসজিদের একাধিক মুসল্লির অভিযোগ, শওকত গাজীর অনেক টাকা; যে কারণে তাঁর পক্ষে এখন অনেক লোক কথা বলে। তবে তিনি ৫ বছর আগে দক্ষিণ রালদিয়া ও হোসেনপুর জামে মসজিদে বিদেশি সংস্থার অর্থায়ন হবে বলে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেন। কিন্তু সেই টাকা এখনো ফেরত দেননি। তাঁর এই ধরনের কাজের বিষয়ে সবচেয়ে ভালো জানেন মসজিদের উপদেষ্টা ওমর মাল। 

পরে ওমর মালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শওকত গাজীর সঙ্গে গত ৩০ আগস্ট কথা হয়েছে। তিনি ওই ঘুষের টাকা ফেরত দেবে বলে জানিয়েছেন।

অনলাইন ক্যাসিনোর মাধ্যমে শওকত গাজীর রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার কাহিনি জানতে গিয়ে বেরিয়ে আসে তাঁর পরিবারের সদস্যদের জড়িত থাকার তথ্য। জানা যায়, এই জুয়ার ব্যবসা পরিচালনা করেন বড় ছেলে মোতালেব গাজী এবং তাঁর সহযোগী ছোট ছেলে মিরাজ গাজী। মোতালেব জুয়ার প্রধান কার্যালয় দুবাইতে আসা-যাওয়া করেন। এই জুয়ার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিন মোতালেব। এই গ্রুপের স্থানীয়দের যুক্ত করান শওকত গাজীর জামাতা মো. কামাল মিজি ওরফে বাবু।

ক্যাসিনোতে জড়িয়ে টাকাপয়সা খোয়ানো শান্ত নামের একজন বলেন, ‘আমি অনলাইনে এই জুয়ার সন্ধান পাই। তারপর ১২৫ শতাংশ বোনাসসহ নানা অফারে এতে জড়িয়ে পড়ি। কিন্তু এই খেলার মধ্যে বিকাশসহ বিভিন্ন মাধ্যমে টাকা দেওয়ার পর যোগাযোগকারী ব্যক্তির নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। তারা অনেক মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সদস্য ছিল দেড় শতাধিক।’

চাঁদপুর শহরের বাবুরহাট এলাকার যুবক মানিক, শামীম ও রওশন বলেন, জুয়ার টাকা পরিশোধ করে তাঁদের না পাওয়ায় একসময় তাঁরা জানতে পারেন, কামাল নামের ব্যক্তিই এই জুয়ার স্থানীয় দালাল। 

এই বিষয়ে বক্তব্যের জন্য হোয়াটসঅ্যাপে জুয়ার গ্রুপের অ্যাডমিন মোতালেব গাজীকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি। 
কামাল মিজি বলেন, ‘অনলাইনে ক্যাসিনো! এটা কী, আমি জানি না। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ, তা সত্য নয়। আমি কোনো জুয়ার সঙ্গে জড়িত না।’

আর অভিযুক্ত শওকত গাজী ক্যাসিনোতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন। তবে বলেন, ‘আমি একসময় দরজির কাজ করতাম। এখন দুবাইতে আমাদের ব্যবসা আছে।’ কী ব্যবসা আছে, তা জানাতে চাননি তিনি। আর মসজিদে বিদেশি অর্থায়নের জন্য ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যার মাধ্যমে ওই টাকা দিয়েছি, সে টাকা দেয়নি। তারপরেও আমি বলছি, আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে যেতে।’

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন