সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে গত ১ সেপ্টেম্বর বিনোটিয়া গ্রামে দুপক্ষের মধ্যে পূর্ববিরোধের জেরে হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় বাদীর করা মামলায় পাঁচজনের নাম সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আটজনের নাম-ঠিকানা সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তবে তাঁদের মধ্যে তিনজন বলছেন, হামলার ঘটনা সম্পর্কে তাঁরা জানেন না। সাক্ষী হিসেবে তাঁদের জবানবন্দিও নেওয়া হয়নি।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, মামলার আসামিদের সঙ্গে বাদীর পরিবারের পূর্ববিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে ১ সেপ্টেম্বর শাহজাদপুর উপজেলার বিনোটিয়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ওপর হামলা চালান একই গ্রামের সাকাত মোল্লা, আবু সাঈদ ও তাঁর আত্মীয়স্বজন। হামলায় আব্দুল কুদ্দুস গুরুতর আহত হন এবং তাঁর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হামলার ঘটনায় আব্দুল কুদ্দুসের ভাই ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে ৪ সেপ্টেম্বর সাতজনের নাম উল্লেখ করে শাহজাদপুর আমলি আদালতে মামলা করেন। এই মামলায় বাদী সাক্ষী হিসেবে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করেন। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটি সাক্ষী হিসেবে আটজনের নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে ২০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
সাক্ষীদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগপত্রে সাক্ষী হিসেবে নাম দেওয়া হয়েছে বলে আসামিপক্ষ আমাকে জানিয়েছেন। ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না অথচ পুলিশ আমাকে এই মামলায় সাক্ষী হিসেবে নাম দিয়েছে। এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে ফোন দিলে তিনি বলেন, ‘‘আপনার যা বলার কোর্টে গিয়ে বলেন।’’’
অপর সাক্ষী ছোরমান আলী বলেন, ‘আমি প্যারালাইসিস রোগী। সব সময় শয্যাশয়ী থাকি। হামলার ঘটনা সম্পর্কে আমি জানিও না; দেখিও নাই। এ বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে আমার কোনো কথা হয়নি। পরে জানতে পারি, পুলিশ আমাকে সাক্ষী বানিয়েছে।’
আরেক সাক্ষী হান্নান মিয়া বলেন, ‘হামলার ঘটনা আমি নিজের চোখে দেখি নাই। নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় জানতে পারি; আব্দুল কুদ্দুসের ওপর হামলা হয়েছে। তবে কারা হামলা করেছে; তা আমি দেখি নাই।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে আমি মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পাই। তদন্তকালে বাদী ও সাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলেই নাম দিয়েছি।
এখন করার কিছুই নাই। যা বলার আদালতে বলতে হবে।’