হোম > ছাপা সংস্করণ

চুপিসারে বেশি ভাড়া লঞ্চে

খান রফিক, বরিশাল

‘নিচে ১২০, ওপরে ১৫০। সাংবাদিক কিন্তু ঘুরছে, জোরে বলা যাবে না।’ গতকাল রোববার দুপুরে বরিশাল নৌবন্দরের অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চঘাটে এক লঞ্চ কর্মচারীকে যাত্রীদের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে এমনটা বলতে দেখা গেছে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর থেকে বরিশালের ১৪টি অভ্যন্তরীণ রুটে অলিখিতভাবে ৩০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ভাড়া। আর ঢাকা-বরিশাল নৌপথে লঞ্চের ডেকের ভাড়া ২০০ টাকা থেকে এক লাফে উঠেছে ৩৫০ টাকায়।

লঞ্চ মালিকেরা বলেছেন, তাঁরা ভাড়া বাড়াননি, কেবল পূর্বের ভাড়া কার্যকর করেছেন। এভাবে ৩০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানোতে আরেক দফা যাত্রীরা লঞ্চে সার্ভিস থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

এদিকে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে বিআইডব্লিউটিএ’র সদর দপ্তরে যাত্রীভাড়া শতভাগ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন লঞ্চ মালিকেরা।

গতকাল রোববার বরিশাল নৌবন্দর ঘুরে দেখা গেছে, বরিশাল-হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জের বাবুগঞ্জ রুটে এমভি আল মদিনায় ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১২০ টাকার স্থলে ১৫০ টাকা। হিজলা পিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র এজাজ মাহমুদ সাইফ বলে, বোনের বাসায় বেড়াতে এসে হঠাৎ জানল লঞ্চের ভাড়া বেড়েছে। তবে ওই লঞ্চের সুকানি রুস্তুম আলী জানান, আগে ১২০ লিটার তেল কিনতেন সাড়ে ৮ হাজার টাকায়। এখন লাগছে সাড়ে ১২ হাজার টাকা। ভাড়া না বাড়ালে মালিককে কীভাবে তাঁর টার্গেট অনুযায়ী টাকা বুঝিয়ে দেবেন। বরিশাল-পাতারহাট রুটের লঞ্চের যাত্রী মো. নাজমুল জানান, লঞ্চের ভাড়া ৩০ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

বরিশাল ভোলা রুটের এমভি আল আরাফাত লঞ্চের চালক সাহাবুদ্দিনও জানালেন তাঁর লঞ্চে ৩০ টাকা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। মালিক সমিতিই এই ভাড়া নির্ধারণ করেছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার বরিশাল জোনের সদস্য স্বপন খান আজকের পত্রিকাকে জানান, অভ্যন্তরীণ রুটের ছোট লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি করার তথ্য সঠিক নয়। তাঁরা কেবল সরকারি রেট ঠিক রেখে ১৫০ টাকা নিচ্ছেন। সরকার নির্ধারিত ভাড়া ১৫৭ টাকা।

এদিকে ঢাকা-বরিশাল নৌপথে লঞ্চের ডেকের ভাড়া গত সপ্তাহেও ছিল মাত্র ২০০ টাকা। পদ্মা সেতু হওয়ায় যাত্রী সংকটে কোনো কোনো লঞ্চে ডেকের ভাড়া আরও কম নেওয়া হতো। কিন্তু গতকাল থেকে ডেকের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩৫০ টাকা। গতকাল রোববার বিকেলে এমভি পারাবাত-১৮-এর ডেকের যাত্রী গোলাম রাব্বি, জিয়াউল হাসান, রহিমা বেগম জানান, ভাড়া ৩৫০ টাকা নির্ধারণ করেছে। তবে অনুরোধ করে হয়তো ৩০০ টাকা রাখবে। সেখানকার একাধিক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এভাবে গায়ের জোরে সরকারি সিদ্ধান্ত ছাড়াই লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি অযৌক্তিক।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু আজকের পত্রিকাকে জানান, তাঁরা লঞ্চে পূর্ব নির্ধারিত ভাড়া নিচ্ছেন। ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চের ডেকের ভাড়া সরকার নির্ধারিত ৩৫০ টাকাই কার্যকর করেছেন। মন্ত্রী দেশের বাইরে আছেন। তিনি ফিরলে ১১ আগস্ট সভা করে ভাড়া নির্ধারণ করবেন। লঞ্চ মালিক রিন্টু দাবি করেছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় তাদের গড়ে ২ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে।

এদিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌযাত্রী পরিবহন সংস্থার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী জানান, যাত্রীভাড়া বৃদ্ধির লিখিত প্রস্তাব বিআইডব্লিউটিএর সদর দপ্তরে জমা দিয়েছেন। তারা এবার যাত্রীভাড়া শতভাগ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন। অর্থাৎ পূর্বের ভাড়া ১০০ টাকা হলে বর্তমানে প্রস্তাব করেছেন ২০০ টাকা। তবে পরবর্তী সময়ে বিআইডব্লিউটিএ এবং লঞ্চ মালিকদের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারিত হবে কত ভাগ ভাড়া বাড়ানো হবে। সিদ্দিকুর রহমান বলেন, লঞ্চ ভাড়া বাড়ছে এটা নিশ্চিত। ভাড়া বৃদ্ধি করা না হলে নৌপরিবহন ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।

বরিশাল নৌযাত্রী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ নিলু বলেন, লঞ্চ মালিকেরা সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই, তাই ইচ্ছেমতো ভাড়া বাড়িয়েছে। এককভাবে লঞ্চের ভাড়া বাড়ানো ঠিক হয়নি। এতে যাত্রী হয়রানি বাড়ার পাশাপাশি লঞ্চ সার্ভিস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন যাত্রীরা। বিষয়টি সরকারের দ্রুত দেখা দরকার বলে তিনি মনে করেন।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন