Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

ধান নিয়ে বিপাকে কৃষক

আশরাফুল আলম আপন, বদরগঞ্জ

ধান নিয়ে বিপাকে কৃষক

বদরগঞ্জে শ্রমিক-সংকটের কারণে বোরো ধান ঘরে তুলতে না পেরে কৃষকেরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। গত বছরের চেয়ে এবার ধান কাটা ও মাড়াইয়ে দ্বিগুণ টাকা দিয়েও শ্রমিক মিলছে না।

উপজেলায় কয়েক দিনের বৃষ্টি ও বাতাসে অনেকের পাকা ধানগাছ জমিতে নুয়ে পড়েছে। এখনো আবহাওয়া খারাপ। এমন অবস্থায় শ্রমিক-সংকটের জন্য কৃষকেরা দায়ী করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরকে।

কৃষকদের অভিযোগ, ওই দপ্তর থেকে বদরগঞ্জে ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের অনেক শ্রমিক মাটি কাটার কাজ করছেন। প্রকল্প চালু না করা হলে এই শ্রমিকেরা ধান কাটতেন।

গতকাল শুক্রবার উপজেলার চাপড়ার দোলা এলাকায় দেখা গেছে, শত শত কৃষকের জমির ধানগাছ জমিতে লুটিয়ে আছে। টানা বৃষ্টি হলে এসব ধান নষ্ট হয়ে যাবে বলে কৃষকেরা আশঙ্কা করছেন।

আমরুলবাড়ি গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমার চার বিঘা জমির ধান পাকছে। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ, প্রায় দিনই ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। পাকা ধান জমিতে শুয়ে পড়েছে। কাটার জন্য শ্রমিক পাচ্ছি না। বেশি দিন জমিতে থাকলে ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

একই গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম জানান, গত বছর এক বিঘা জমির ধান কাটা ও মাড়াইয়ে শ্রমিকের খরচ হয়েছিল ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। এবার হচ্ছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। তবুও শ্রমিক মিলছে না।

রামকৃষ্ণপুর মধ্যপাড়া গ্রামের আলা উদ্দিনের তিন বিঘা জমির ধান পেকে শুয়ে পড়েছে। তিনি গতকাল সেই ধান কাটতে শ্রমিক লাগিয়েছেন। আলা উদ্দিন বলেন, ‘সাত দিন আগে জমির ধান পেকেছে। কয়েক দিন ধরে শ্রমিক খুঁজেও পাইনি। আমার তিন বিঘা জমির ধান টাকার জন্য শ্রমিকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ১৮ হাজার টাকায়। এই ধান বাড়িতে নিয়ে মাড়াইসহ ঘরে তোলা পর্যন্ত খরচ হবে আরও ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু এখান থেকে যে ধান পাব তার দাম বর্তমান বাজারে ৯৪ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। তিন বিঘা জমিতে খরচ হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা। বাজারে দাম ভালো থাকায় কিছুটা লাভের মুখ দেখছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার বদরগঞ্জে ১৬ হাজার ৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ধান কাটা ও মাড়াই শুরু করা হয়। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৫ শতাংশ জমির ধান ঘরে উঠেছে।

পিআইওর কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৯ মে উপজেলায় ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এতে ১ হাজার ৫৭১ শ্রমিক সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মাটি কাটার কাজ করছেন। তাঁদের মধ্যে ১ হাজার ৮৩ জন পুরুষ এবং অন্যরা নারীশ্রমিক।

নাম প্রকাশ না করে এক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, এখন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ভরা মৌসুম। এই মৌসুমে এমনিতেই শ্রমিক সংকট থাকে। তার ওপর দেড় হাজার শ্রমিককে মাটি কাটার কাজে লাগানো হয়েছে। যদি তাঁদের মাটি কাটার কাজে না লাগাত তাহলে মাঠ থেকে দ্রুত ধান ঘরে উঠত। এতে কৃষক অনেকটাই উপকৃত হতো।

তবে পিআইও বাবুল জানান, এই কর্মসূচি চালু না করলে প্রকল্পের টাকা ফেরত যেত।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা মো. জোবাইদুর রহমান বলেন, এই সময়ে কর্মসৃজন প্রকল্প চালু করা ঠিক হয়নি। কৃষকদের কথা চিন্তা করে আপাতত তা বন্ধ রাখতে প্রশাসনকে অনুরোধ করা হবে।

কৃষি কর্মকর্তা জানান, কিছু ধানগাছ জমিতে পড়ে গেছে। তবে এতে কৃষকের ক্ষতি হওয়ার কথা নয়। কারণ পড়ে যাওয়া ধান পেকে গেছে। আবহাওয়া খারাপ থাকায় অনেক কৃষক ধান কাটা ও মাড়াই করছেন না। আর শ্রমিকেরও কিছুটা সংকট রয়েছে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সাঈদ বলেন, ‘কৃষকের স্বার্থটাই আগে দেখতে হবে। যদি কর্মসৃজন চালু থাকায় শ্রমিকের সংকট হয়ে থাকে তাহলে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ