৪ মেয়ে, ১ ছেলেসহ সাত সদস্যের পরিবার কৃষক খালেদ সরদারের। নিজের ৪ বিঘা জমি চাষাবাদ করেই জীবিকার ব্যবস্থা করেন। রবি মৌসুমে পেঁয়াজের আবাদ করেও ভালো দাম পাননি। এতে চিন্তায় পড়েন তিনি। পরে সেই খেতে চাষ করেন পাট। ভালো ফলনের আশা পাটের পরিচর্ষার কমতি রাখেননি তিনি। কিন্তু এক দিনের ব্যবধানের সব শেষ খালেদের। ৪ বিঘা পাটখেতে কে বা কারা বিষ প্রয়োগ করেছেন। এতে পাটগাছ মরে যাচ্ছে।
এমন শত্রুতায় কান্নায় ভেঙে পড়েন কৃষক খালেদ।
গত রোববার বিকেলে জাজিরার মুলনা ইউনিয়নের নগর বোয়ালিয়া গ্রামের খালেদ সরদারের পাট খেতে গিয়ে দেখা গেছে, আশপাশের সব জমিতে পাট স্বাভাবিক রয়েছে। শুধু তাঁর ৪ বিঘা জমির পাটের আগা মরে নিচের দিকে ঝুঁকে গেছে। নির্দিষ্ট জমিতে ক্ষতিকর বিষ প্রয়োগ করে পাট নষ্ট করা হয়েছে। খবর পেয়ে বিকেলেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন।
ক্ষতিগ্রস্ত খালেদ সরদার বলেন, ‘কৃষিকাজ করেই সংসার চালাই। এই পাট ছিল পরিবারের বেঁচে থাকার স্বপ্ন। এক রাতেই সেই স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। এর আগে পেঁয়াজে তেমন লাভবান হতে পারিনি। ভাবছিলাম পাটের ফলন ভালো হওয়ায় ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারব। কিন্তু সেটা আর হলো না। বরং পাট চাষে ৪ বিঘা জমিতে প্রায় ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এতে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেল। আমার সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা নেই, কে আমার এই সর্বনাশ করল? এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন বলেন, ‘মাঠে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পাটের এমন পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে ক্ষতিকর আগাছানাশক প্রয়োগ করা হয়েছে। অধিকতর তদন্তের জন্য সংগ্রহ করা নমুনা ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।’
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু মন্ডল বলেন, ‘এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’