আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের শাখারিয়া থেকে বান্দ্রা পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটার সড়কের পাশে অর্ধশতাধিক ধানের বাজার গড়ে উঠছে। এতে মারাত্মকভাবে বিঘ্ন হচ্ছে যানচলাচল। অপরদিকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলায় এ বছর আমন ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৭ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৬০ ভাগ ধান বিক্রি করেন কৃষক। ফড়িয়ারা নিজেদের ইচ্ছামাফিক মহাসড়কের ওপরে অবৈধ ধানের বাজার গড়ে তুলে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনছেন। এ সব বাজারে ফড়িয়াদের কোনো রাজস্ব দিতে হয় না। এতে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন কৃষকেরা। ফলে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। ফড়িয়ারা যশোর, খুলনা, গাইবান্ধা, কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ধান চালানের জন্য মহাসড়কের ওপরে ট্রাক, কাভার ট্রাক, লরি রেখে ধান বোঝাই করছেন। এদিকে সরকার নির্ধারিত বাজারে ধান নিয়ে যাচ্ছেন না কৃষকেরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কের আমতলী থেকে বান্দ্রা পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটার সড়কে শাখারিয়া, ব্রিক ফিল্ড, কেওয়াবুনিয়া, মহিষকাটা, চুনাখালী, সাহেববাড়ী, আমড়াগাছিয়া, ডাক্তারবাড়ী, শিকদার বাড়ি, ঘটখালী, একে স্কুল, বাঁধঘাট, হাসপাতালের সামনে, ছুড়িকাটা, মানিকঝুড়ি, খুড়িয়ার খেয়াঘাট, আকনবাড়ী, ফকিরবাড়ী, খলিয়ান, কল্যাণপুর ও বান্দ্রাসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এসব বাজার বসেছে।
কল্যাণপুর গ্রামের কৃষক জলিল মিয়া বলেন, ‘এখন আর ধান বিক্রি করতে বাজারে যেতে হয় না। ফড়িয়ারা বাড়িতে এসে ধানের বায়না করে যায়। ধান গাড়িতে করে তাঁদের নির্ধারিত বাজারে পৌঁছে দিই।’
বরগুনা বাসমালিক সমিতির লাইন সম্পাদক সজল মৃধা জানান, মহাসড়কে ধানের বাজার গড়ে ওঠায় গাড়ি চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। অতি দ্রুত এ বাজার বন্ধের দাবি জানান তিনি।
আমতলী উপজেলা আড়তদার সমিতির সাধারণ জাকির হোসেন বলেন, ‘মহাসড়কের ওপরে ফড়িয়ারা অবৈধভাবে ধানের বাজার গড়ে তুলেছেন। এতে কৃষকেরা সরকার নির্ধারিত বাজারে ধান নিয়ে আসছেন না। ফলে আড়তদারেরা চাহিদা মতো ধান না পেয়ে তাঁদের ব্যবসা বন্ধের উপক্রম হচ্ছে।’
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ বিন রশিদ বলেন, ‘সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে এমন অবৈধ ধানের বাজার বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’