ভোলার লালমোহন উপজেলার গ্রামগঞ্জে আগের মতো তালগাছ দেখা যায় না। এখন সরকারিভাবে তালগাছের চারা রোপণের ওপর জোর দেওয়া হলেও তালগাছ কাটা থামছে না। নানা কারণ দেখিয়ে রাস্তার পাশের ও ব্যক্তিমালিকানাধীন তালগাছ কেটে বিভিন্ন করাতকলে বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু ঝড়-জলোচ্ছ্বাস ও বজ্রপাতের হাত থেকে উপকূলীয় অঞ্চল রক্ষা করতে গেলে তালগাছ বেশি করে রোপণ করা জরুরি বলে মনে করে উপজেলা কৃষি কার্যালয়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ৭-৮ বছর আগে এ উপজেলা তালগাছ ছিল ৩০ হাজারেরও বেশি। বর্তমানে উপজেলায় ১৫ হাজারের কিছু বেশি তালগাছ রয়েছে। তালগাছ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে নদীভাঙন, ঝড়-বন্যার ও মানুষের অসচেতনতাকে প্রধান কারণ বলে মনে করেন তাঁরা।
উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের সৈনিক বাজার এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেন মেস্তুরী বলেন, ‘এখন আর আগের মতো তাল গাছ দেখা যায় না। আর তালও পাওয়া যায় না। আগের মতো তালের রসও পাওয়া যায় না। এখন তালের শাঁস খেতে পারছি। কিছুদিন পর এটিও আর খেতে পারব কিনা জানা নেই।’
লালমোহন উপজেলার নেচার কনজারভেশন কমিটির (এনসিসি) সমন্বয় কারী মো. জসিম জনি বলেন, আগের মানুষের মধ্যে তাল গাছ নিয়ে সচেতনতা ছিল। তাঁরা বুঝতেন তাল গাছের উপকারিতা। সেসব মানুষ এখন আর নেই। এখনকার মানুষের মধ্যে তাল গাছের উপকারিতা নিয়ে ভাবার সময় নেই। যদিও এখনকার প্রজন্মের মধ্যে উপকারিতাগুলো বোঝানো যায় তাহলে হয়তো তাল গাছ রক্ষা করা যেতে পারে।
লালমোহনে উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল আমীন বলেন, ‘বৈশ্বিক আবহাওয়ার কারণে তাল গাছ লালমোহনে দিন দিন কমে যাচ্ছে। তবে আমরা কৃষি কার্যালয়ের পক্ষ থেকে তাল গাছ লাগানোর জন্য উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে বিভিন্ন সময় মানুষদের পরামর্শ দিয়ে থাকি।’ দিন দিন তালগাছ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলের মানুষ তালগাছের গুরুত্ব না বুঝে কেটে ফেলছে। সে কারণে তালগাছ কমে যাচ্ছে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, তালগাছ ফলন কম হলেও দুর্যোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করে, এটি দুর্যোগ সহনশীল একটি গাছ।