বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সহিংসতা ও চলমান কারফিউ পরিস্থিতির মধ্যেই প্রায় এক মাস পর আজ সোমবার বসতে যাচ্ছে মন্ত্রিসভার বৈঠক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বেলা ১১টায় তাঁর কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে মন্ত্রিসভার সদস্যদের পাশাপাশি সব মন্ত্রণালয়ের সচিবেরাও উপস্থিত থাকতে পারেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সহিংসতার পাশাপাশি কারফিউ-পরবর্তী পরিস্থিতি ও সরকারি স্থাপনায় হামলার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে বলে জানা গেছে। আন্দোলনের সময় মন্ত্রী-সচিবেরা কে কোথায় ছিলেন, তাঁরা কে কী করেছেন, সে বিষয় আলোচনার পাশাপাশি এখন কী করণীয়, তা নিয়েও মতামত চাওয়া হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সহিংসতায় প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের এবং তাদের অধীনস্থ দপ্তর ও সংস্থার কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেসবের পরিসংখ্যানও চাওয়া হতে পারে। সার্বিক পরিস্থিতি আলোচনা শেষে ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ করে মন্ত্রী-সচিবদের নানা নির্দেশনা দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া বৈঠকে ‘মন্ত্রিসভা বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে ২০২৪ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (এপ্রিল-জুন) প্রতিবেদন’ অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য জানান, প্রায় এক মাস মন্ত্রিসভার বৈঠক হচ্ছে না। এরই মধ্যে দেশে অনেক অঘটন ঘটেছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন হাইজ্যাক করেছে বিএনপি-জামায়াত চক্র। তারা দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে মন্ত্রিসভার বৈঠক অবশ্যই তাৎপর্যময়।
জানা গেছে, সর্বশেষ মন্ত্রিসভার বৈঠক ১ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়। ২৮ দিন পর আজ ফের মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে কোটা সংস্কারকে কেন্দ্র করে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ছাত্র আন্দোলন, সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে দেশবাসী। ১৪ জুলাই রাত থেকে কোটা আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়। সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। রাস্তায় নেমে পড়ে শিক্ষার্থীরা। তাদের প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় ক্ষমতাসীন দল। এতে রাজধানীসহ সারা দেশে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশ, র্যাব, আনসার, বিজিবি মোতায়েন করা হলেও ঢাকা, রংপুর, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে পুলিশসহ অনেক মানুষ নিহত হয়। আহত হয় হাজারো মানুষ।
এমন পরিস্থিতিতে জারি করা কারফিউ এখনো বহাল আছে। দেশের বেশির ভাগ জায়গায় দিনের বেলা শিথিল থাকলেও রাতে কারফিউ বহাল থাকছে। অফিস-আদালত চলছে সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত। চলমান কারফিউ কবে নাগাদ তুলে নেওয়া হতে পারে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে।