হোম > ছাপা সংস্করণ

গাড়ির হর্নে কান ফাটে, দেখার কেউ নেই

রাসেল মাহমুদ, ঢাকা

সামনে ঈদ। কেনাকাটা সারতে প্রতিদিন ঘরের বাইরে যাচ্ছে রাজধানীর লাখ লাখ মানুষ। ঘরমুখী মানুষেরা ছুটছে রেলস্টেশন, লঞ্চঘাট ও বাস কাউন্টারের দিকে। এতে যানবাহনের চাপ বেড়েছে সড়কে। গাড়ির হর্নে বেড়েছে শব্দদূষণ।

গত কয়েক দিন রাজধানীর মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, জিপিও, গুলিস্তান, কাকরাইল, শাহবাগসহ বিভিন্ন মোড়ে গিয়ে দেখা যায় সমানে হর্ন বাজিয়ে যাচ্ছে গাড়িগুলো। তীব্র শব্দে যে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়, তা নিয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই কারও।

রাজধানীর মগবাজার মোড়ে কথা হয় কুমিল্লা স্টোরের দোকানি ইকবাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যানজট, গাড়ির হর্ন বাজানো—এসব নিয়ে লেখলে কি কোনো কাম (কাজ) হইব? এ দেশে প্রধানমন্ত্রীর কথাতেই কোনো কাম (কাজ) হয় না। কে শুনে কার কথা! আমরাও অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এসব শব্দ নিয়ে ভাবি না। আমাদের কাজ ব্যবসা করার, আমরা ব্যবসা করি।’

রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে প্রায়ই ট্রাফিক সিগন্যালে তীব্র যানজট তৈরি হয়। সিগন্যালে আটকে থাকা পরিবহনগুলোর চালকেরা সিগন্যাল ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হর্ন বাজানোর এক অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নামে।

২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনের ৮৮ ধারা অনুযায়ী, উচ্চমাত্রায় হর্ন বাজালে অনধিক তিন মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা করার কথা বলা আছে। কিন্তু এই আইন বাস্তবায়নে পুলিশের কোনো তৎপরতা নেই। ট্রাফিক কর্মকর্তারা জানান, আইনের এই ধারাটিতে এখন পর্যন্ত একটি মামলাও হয়নি।

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০০৬-এর ৮ (২) ধারায় বলা আছে, নীরব এলাকায় চলাচলকালে যানবাহনে কোনো প্রকার হর্ন বাজানো যাবে না। অথচ পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলনের (পরিজা) এক জরিপে বলা হয়, নীরব এলাকার শব্দের মাত্রাও মানমাত্রার চেয়ে আড়াই গুণ বেশি। আর শাহবাগ, গুলিস্তান, ফার্মগেট, আসাদ গেটসহ রাজধানীর ব্যস্ত এলাকাগুলোয় শব্দের মাত্রা গড়ে প্রায় ৯৫ ডেসিবেল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, মানুষের সাময়িক শ্রবণশক্তি ৬০ ডেসিবেল শব্দে নষ্ট হতে পারে। আর ১০০ ডেসিবেল শব্দ চিরতরে শ্রবণশক্তি নষ্ট করে দিতে পারে। এই হিসেবে রাজধানীতে শব্দদূষণ বহু মানুষকে বধির করে দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকা শহরের প্রায় সব এলাকাতেই গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি শব্দ হচ্ছে। শব্দদূষণের শিকার হচ্ছেন সব বয়সী মানুষ। বেশি ঝুঁকিতে শিশুরা। 

শব্দদূষণের নেতিবাচক প্রভাবের বিষয়ে জানতে চাইলে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিডফোর্ড হাসপাতালের নাক কান গলা বিভাগের অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু আজকের পত্রিকাকে বলেন, মাত্রাতিরিক্ত শব্দের কারণে কানে কম শোনা, বদির হওয়াসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে থাকে। বদির হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ উচ্চ শব্দদূষণ। ২০১৭ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ঢাকায় যে হারে শব্দদূষণ হচ্ছে, তাতে ২০৩৫ সালের মধ্যে ঢাকার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ কানে কম শুনবে। তাই শব্দ নিয়ন্ত্রণে যথাযথভাবে আইন প্রয়োগ করতে হবে।

ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা ও গাড়ির হর্ন বাজানো নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ট্রাফিক সিগন্যালে কিছু কিছু সময় যানজট থাকে। তখন গাড়িগুলোকে অপেক্ষা করতেই হয়। এ সময় চালকেরা অনেকে গাড়ির হর্ন বাজান।

উচ্চমাত্রার হর্ন বাজানো নিয়ন্ত্রণ না হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, হর্ন বাজালে ওই মুহূর্তে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন। আমাদের দেশে সেই প্রযুক্তি এখনো হয়নি। উচ্চমাত্রায় হর্ন বাজানোর বিষয়ে যে আইনটি রয়েছে তা বাস্তবায়নে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। এই আইনে এখনো কোনো মামলাও হয়নি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সড়কে এত ধরনের বাহন পৃথিবীর আর কোনো দেশে নেই। হর্ন দেওয়ার পেছনে গাড়ির চালকেরা ধীরগতির গাড়ি ও পথচারী পারাপারকে দায়ী করেন। কিন্তু হর্ন বাজানোটাকে চালকেরা তাদের একটা ক্ষমতা মনে করে। সরকার এটা নিয়ন্ত্রণে প্রচার ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ করে শাস্তি দিচ্ছে না।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন