চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার রাস্তার পাশে থাকা ঢাকনাবিহীন নালাগুলো দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঝে মাঝেই নালায় পড়ে ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা। ঢাকনা না থাকায় ড্রেনগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়ে ব্যাহত হচ্ছে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। নালার এই দুর্ভোগ থেকে দ্রুত রেহাই চান পৌরবাসী। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান করা হবে। নতুন করে নালা নির্মাণ ও মেরামতের কাজ প্রক্রিয়াধীন।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় কাঁচা, পাকা ও আধা পাকা মিলে রাস্তা রয়েছে ২৬৩ কিলোমিটার। সেই রাস্তার পাশে নালা আছে মাত্র ৫৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। যেসব এলাকায় নালাগুলো রয়েছে, তার সবই প্রায় নাজুক অবস্থায় পড়ে আছে। কিছু নালা ২০ থেকে ২৫ বছর আগে তৈরি করা। নির্ধারিত লেবেল ঠিক না থাকা এবং অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণের কারণে সেগুলো এখন পৌরসভারই গলার কাঁটা। পানির লেবেল ঠিক না থাকায় সঠিকভাবে পানি নিষ্কাশনও হচ্ছে না এসব নালা দিয়ে।
সরেজমিন দেখা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে রয়েছে বেশ কিছু ঢাকনাবিহীন নালা। দুর্গন্ধ ছড়ানোর কারণে ওই এলাকা রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটা দুর্বিষহ ব্যাপার।
ভুক্তভোগীরা জানান, রাতের বেলায় নালায় পড়ে যাওয়ার ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। ঢাকনা না থাকার কারণে রাস্তার সব ময়লা-আবর্জনাও নালার মধ্যে জমাট হয়। এতে করে নালায় ঠিকমতো পানি চলাচল করতে পারে না। দুর্গন্ধ যেমন ছড়াচ্ছে, ঠিক তেমনি মশার উপদ্রবও বেড়েছে।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সিনেমা হল পাড়ার বাসিন্দা নিশান আহমেদ বলেন, ‘কিছু নালা ঢাকনা না থাকায় সেগুলো সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাড়ার ছোট ছোট বাচ্চারা খেলতে গিয়ে মাঝেমধ্যে নালায় পড়ে যাচ্ছে। রাতের বেলা পাশ দিয়ে হাঁটাও মুশকিল। পৌর কর্তৃপক্ষের এ সমস্যার দিকে মোটেও নজর নেই।’
মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা কবির উদ্দিন বলেন, ‘এ এলাকায় চাকরি সূত্রে ভাড়ায় থাকি। কিন্তু কিছু কিছু স্থানের রাস্তা দিয়ে হাঁটা কষ্টকর। নালা দিয়ে দুর্গন্ধ বের হয়, বমি আসে। নালা ঠিকমতো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নও করা হয় না।’
কোর্টপাড়ার বাসিন্দা সেলিম হাবিব বলেন, ‘কিছু কিছু নালা অনেক আগে তৈরি। অনেকটা অপরিকল্পিতভাবেই সেগুলো তৈরি হয়েছে। যার কারণে সেগুলো এখন ভাঙাচোরা হয়ে গেছে। বেশির ভাগ নালার অবস্থা নাজুক। নালা মেরামত ও পরিকল্পিতভাবে বাকিগুলো তৈরি করা উচিত।’
পথচারী হাছান আলী বলেন, ‘ঢাকনাবিহীন নালার কারণে আবর্জনায় ভর্তি হয়ে বৃষ্টি ও শুষ্ক মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে পানিতে আটকে থাকতে হয়।’
এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালেন পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন। তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি শহরের নালা ব্যবস্থাপনা সুন্দর করার জন্য। ভাঙাচোরা নালা মেরামত করার কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে। বাকি নালাগুলো নতুন রূপে নির্মাণের জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। টেন্ডার ফাইনাল হলে শিগগিরই কাজগুলো করা হবে। দ্রুতই পৌরবাসী এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবেন।’