সম্প্রতি আপনার অভিনীত ‘রঙিন আশা’ নাটকটি মুক্তি পেয়েছে। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
শ্রমজীবী এক দম্পতির গল্প নিয়ে নাটক। লোকটি ভ্যান চালায়, আর তার স্ত্রী কারওয়ান বাজারে মাছ কাটে। নাটকটি বানিয়েছেন রাফাত মজুমদার রিংকু। প্রচারের পর থেকে দর্শকের ভালো সাড়া পাচ্ছি। ভালো গল্প হলে দর্শক যে পছন্দ করছেন, দেখছেন ও অ্যাপ্রিশিয়েট করছেন, এটা খুব স্বস্তি দিচ্ছে। যখন কোনো গল্প দর্শকপ্রিয় হয় তখন মনে হয় কাজটা সার্থক।
এই নাটকে আপনার বিপরীতে অভিনয় করেছেন তানজিম সাইয়ারা তটিনী। সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে জুটি বেঁধে অনেক কাজ করছেন। এর আগে সাদিয়া আয়মানের সঙ্গেও পরপর অনেক কাজে দেখা গেছে আপনাকে। নাটকে এই জুটি বেঁধে কাজ করার কোনো সুবিধা আছে?
অভিনয়শিল্পী নির্বাচন করেন নির্মাতা। গল্প অনুযায়ী যাঁকে মানানসই তাঁকেই কাস্ট করা হয়। তাই কাজটা কার সঙ্গে করছি এটা আমার হাতে নেই। জুটি বেঁধে কাজ করলে সুবিধা যেমন আছে, তেমনি অসুবিধাও আছে। সুবিধা হচ্ছে, একটা বোঝাপড়া সৃষ্টি হয়। শুটিংয়ের সময় এটা খুব কাজে লাগে। আবার, বারবার একই জুটি নাটকের বৈচিত্র কমিয়ে দেয়। অথচ, কোনো জুটির একটা কাজ দর্শকপ্রিয় হলে একই ধরনের গল্পে একই জুটি নিয়ে ভাবতে থাকেন সবাই। এটা না হলেই ভালো।
একসঙ্গে কাজ করলে প্রেমের গুঞ্জনও ওঠে। সাদিয়া আয়মানের সঙ্গে আপনার প্রেমের গুঞ্জন প্রায়ই শোনা যায়।
এই বিষয় নিয়ে অনেকবার কথা বলেছি। নতুন কিছু বলার নেই। গুঞ্জন তো গুঞ্জনই। এই ধরনের কথা আমিও শুনি। সাদিয়ার সঙ্গে আমার জুটি দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। সেখান থেকেই এই চিন্তা বা কথাগুলো আসে। আলোচনাটা কিন্তু সুন্দর, খারাপ কিছু না। আমি উপভোগ করি।
রোজার ঈদে গিয়াসউদ্দিন সেলিমের ‘কাজলরেখা’ মুক্তি পাচ্ছে। এখানে আপনিও অভিনয় করেছেন।
মৈমনসিংহ গীতিকা থেকে নির্মিত হয়েছে কাজলরেখা। এটাকে মিউজিক্যাল ফিল্মও বলা যায়। আমি যেহেতু মিউজিকের ছাত্র তাই গানে গানে গল্প বলার প্রতি আলাদা ভালো লাগা আগে থেকেই আছে। ক্যাম্পাসজীবন থেকেই মৈমনসিংহ গীতিকার সঙ্গে আমার পরিচয়। যখন সেলিম ভাইয়ের কাছ থেকে কাজটা সম্পর্কে শুনলাম, তখন থেকেই সিনেমাটি নিয়ে আমি এক্সসাইটেড। এই ধরনের কাজ সচরাচর হয় না। সামনে হবে কি না তাও জানা নেই। তাই কাজলরেখায় অভিনয়ের সুযোগটি মিস করতে চাইনি।
৪০০ বছর আগের প্রেক্ষাপটে নির্মিত হয়েছে কাজলরেখা। শুটিংয়ের সময় বিষয়টি কতটুকু চ্যালেঞ্জিং ছিল?
শুটিংয়ের সময়টা খুব বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল না। কারণ শুটিং শুরুর আগে আমরা অনেক দিন রিহার্সাল করেছি। এ ছাড়া সিনেমাটি নিয়ে প্রায় এক যুগ গবেষণা হয়েছে। লোকেশন, সেট ডিজাইন, কস্টিউম কেমন হবে তা রিসার্চ করে ঠিক করা হয়েছে। শুটিং লোকেশনে এমন একটা আবহ সৃষ্টি হয়েছিল যে চরিত্র ধারণ করা সবার জন্যই সহজ হয়ে গিয়েছিল।
কাজলরেখা ছাড়া মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের ‘বনলতা সেন’ ও অনম বিশ্বাসের ‘ফুটবল ৭১’ সিনেমার কাজ শেষ করেছি। সিনেমা দুটি নিয়ে এখনই বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। আশা করছি, শিগগির সিনেমা দুটি দেখতে পারবে দর্শক।
ওটিটির বেশ কিছু কাজ করে নজর কেড়েছিলেন। কিন্তু গত এক বছরের বেশি সময় আপনাকে এই মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ কী?
ওটিটির কাজে অনেক সময় দিতে হয়। গত বছর প্রায় পুরোটা সময় বনলতা সেন সিনেমার শুটিং করেছি। সে সিনেমায় লুকের একটা বিষয় ছিল। ঋতু বৈচিত্র্য, শুটিং লোকেশন—সব মিলিয়ে এক বছরের বেশি সময় লেগেছে কাজটি শেষ করতে। তাই ওটিটির কোনো কাজ করা হয়নি। যতটুকু সময় পাওয়া গেছে, নাটকের কাজ করেছি। সামনে ঈদ। তাই নাটক নিয়ে ব্যস্ততা আছে। কোরবানির ঈদের পর থেকে ওটিটির কাজ শুরু করব।
ক্যারিয়ারের এই ব্যস্ততা কতটা উপভোগ করছেন?
অভিনয়ের এই ব্যস্ততা তো সব সময়ই উপভোগ করি। তবে ব্যস্ততার অনুপাতে কাজের প্রস্তুতি এবং যথাযথ বিশ্রাম নেওয়া হচ্ছে না। এ ব্যাপারটা ভাবাচ্ছে।