রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের দ্বন্দ্ব কাজে লাগাতে চায় আওয়ামী লীগ। নির্বাচন ঘিরে দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে চাপে রেখেছে ক্ষমতাসীন দলটি। তবে জাপার দুর্গখ্যাত রসিক নির্বাচনে এর কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জাপার স্থানীয় একাধিক নেতা-কর্মী জানিয়েছেন।
জাপা এখন দুই ভাগে বিভক্ত হলেও রংপুরে জিএম কাদেরের অনুসারী বেশি। কাদের-রওশন দ্বন্দ্বের ফলে দুজনেই রসিক নির্বাচনে প্রার্থী দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ইতিমধ্যে বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে জিএম কাদেরের পক্ষে মনোনয়ন দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। মোস্তাফিজার গত নির্বাচনেও লাঙ্গলের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে জয়ী হন। কিন্তু রওশন-রাঙা পক্ষ এখনো কোনো প্রার্থী দেয়নি। তফসিল ঘোষণার আগে রওশনের কাছ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন বলে প্রচারণা চালিয়েছিলেন সাবেক পৌর মেয়র ও প্রবাসী নেতা এ কে এম আব্দুর রউফ মানিক। কিন্তু তফসিল ঘোষণার পর তাঁকে আর প্রচারণায় দেখা যায়নি। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, তিনি এখন আমেরিকায় অবস্থান করছেন। তবে রওশনের পক্ষে রসিক নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য ঢাকায় জাসদের এক নেতা আছেন বলে জানা গেছে।
জাপার স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, জিএম কাদেরের ওপর নিষেধাজ্ঞার নিষ্পত্তি না করে তা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এখান থেকে স্পষ্ট হয় যে এর পেছনে সরকারের হাত রয়েছে। সাধারণ মানুষ ও জাতীয় পার্টির কাছে সরকারের রওশন এরশাদকে নিয়ে কলকাঠি নাড়ার বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে উঠেছে। এতে সরকারেরই ক্ষতি বলে জানান নেতা-কর্মীরা।
রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির বলেন, রংপুরের জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা এক। সবাই দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের অনুসারী। ইতিমধ্যে মোস্তাফিজার রহমানকে লাঙ্গলের মনোনয়ন দিয়েছে। এখানে অন্য কেউ আসার সুযোগ নেই। তবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটা ষড়যন্ত্রের ছক কষছে। যারা শঙ্কা তৈরি করতে চায় তাদের জবাব দিতে আমরা প্রস্তুত।
লাঙ্গলের মনোনয়ন পাওয়া বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা বলেন, ‘রসিক নির্বাচনে আমার কোনো বিকল্প নেই। রংপুরে জাপা বিভক্ত হয়নি। সবাই এক হয়ে কাজ করছেন। এখানে কোনো বিভাজন নেই। তবে ক্ষমতাসীন দল ষড়যন্ত্র করছে। এতে কোনো লাভ হবে না। আমরা সব দিক দিয়ে প্রস্তুত রয়েছি।’
প্রস্তুতিতে রসিক নির্বাচনে সব দিক থেকে জাতীয় পার্টি এগিয়ে থাকলেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিটি নির্বাচনের জন্য ২০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু করবে। তবে রসিক নির্বাচনে হাফ ডজন নেতা প্রচারণা চালিয়েছেন। কে পাবেন নৌকা এ নিয়ে সংশয় কাজ করছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে। উল্লেখ্য, নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ২৯ নভেম্বর, ১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই এবং ৮ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ।