সারা দেশের মতো খুলনার কয়রায় বেড়েই চলেছে নিত্যপণ্যের দাম। দ্রব্যমূল্যের এ ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা উপজেলার নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। তাঁদের আয়ের পুরোটাই শেষ হয়ে যাচ্ছে খাদ্যদ্রব্য কিনতে।গত দুই বছর করোনাভাইরাসের ছোবল ও নদীভাঙনের ধকল কাটিয়ে না উঠতেই নতুন করে বিপাকে পড়েছেন উপকূলীয় এলাকার মানুষ। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে উপজেলা প্রশাসন শিগগির অভিযান চালাবে বলে জানা গেছে।
ক্রেতারা জানান, বেশির ভাগ দ্রব্যের দাম সাধারণ ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। নিম্ন আয়ের মানুষ যা উপার্জন করছেন, তার পুরোটাই খাদ্যদ্রব্য কিনতে শেষ হয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদির জন্য ব্যয় করার মতো অর্থ উপকূলের এই সাধারণ মানুষের হাতে থাকছে না। অপর দিকে অভিযোগ উঠেছে, বেশি মুনাফা লাভের আশায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছে বাজারের কিছু মুনাফালোভী মজুতদার। আর ব্যবসায়ীরা তৈরি করেছেন সিন্ডিকেট। তা ছাড়া সবজির বাজারেও আগুন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু মনিটরিংয়ের অভাবেই দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতি।
গত রোববার দেউলিয়া বাজারে দেখা যায়, মোটা চালের কেজি ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা, মাঝারি ৫৩ থেকে ৫৬, চিকন ৬৩ থেকে ৬৬ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে বোতলজাত প্রতি লিটার ১৭০ আর খোলা ১৮০ টাকা। চিনির কেজি ৮০ টাকা, মসুর ডাল ৯০ থেকে ১২০, পেঁয়াজ ৫০, আলু ২০, বেগুন ৩০, ফুলকপি ৩০, কুমড়া ৩০ টাকা। ১২ কেজির এলপি গ্যাস ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।দেউলিয়া বাজারে আসা সুকুমার মণ্ডল বলেন, ‘বাজারে প্রতিটি দ্রব্যের দাম বেশি। এভাবে বাড়তে থাকলে সাধারণ জনগণ চলবে কীভাবে। আমাদের অঞ্চলে সব ধরনের শাকসবজির চাষ হয়। তরপরও শীতকালে চড়া দামে শাকসবজি কিনতে হয়েছে। এর আগে টমেটো, শিম, ফুলকপি ও আলুর দাম এত বেশি দেখিনি।’
কাঁচামাল ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, ‘অন্য বছরের তুলনায় এবার সবজির দাম বেশি। কিন্তু আমরা যে দামে কিনি তার ওপর নামমাত্র কিছু লাভ রেখে বিক্রি করি।’ ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘পাইকারি বাজারে বেশি দামে কেনার কারণে আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। গত কয়েক দিনে খুচরা বাজারে তেল, মসুর ডাল ও চিনির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।’
ইউএনও অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, ‘বাজারের সব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। উপজেলার প্রধান বাজারগুলোতে আমি নিজে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছি। রমজান সামনে রেখে আমরা ব্যবসায়ীদের নিয়ে সেমিনার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।