শরীফ নাসরুল্লাহ, ঢাকা
উদ্যানের চারদিকে হাতুড়ির ঠক ঠক আওয়াজ। এখানে-সেখানে চেরাই কাঠের স্তূপ। কাঠগুলো জোড়া লাগাচ্ছেন কারিগরেরা। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একে একে গড়ে উঠেছে সাজানো-গোছানো এক একটি স্টল।
বাঙালির প্রাণের ‘অমর একুশে বইমেলা’ শুরু হচ্ছে তিন দিন বাদেই। স্টল বরাদ্দ হয়ে গেছে গত মঙ্গলবার। তাই বাহারি নকশায় স্টল গুছিয়ে আনতে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। স্টল বরাদ্দ পাওয়া প্রকাশকেরা এই কাজের পাশাপাশি বই ছাপার কাজেও ব্যস্ত।
বাংলা একাডেমি সূত্র বলছে, এবারের মেলার বিন্যাসে খুব একটা পরিবর্তন নেই। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান—দুটো স্থানেই থাকছে মেলা। একাডেমি প্রাঙ্গণে মূল মঞ্চে থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন।
মেলা পরিচালনা কমিটি জানিয়েছে, এবার বাড়তি কোনো স্টল করা হয়নি। তবে নতুন প্রকাশকদের জন্যও ব্যবস্থা করা হয়েছে।তালিকাভুক্ত ৬০১টি প্রকাশনী ছাড়াও নতুনদের মধ্যে ৭৭টি আবেদন জমা পড়ে। সেখান থেকে ২৩টি প্রকাশনীর আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার লটারির মাধ্যমে স্টল বরাদ্দ করা হয়।
২০২৪ সাল অধিবর্ষ (লিপ ইয়ার) হওয়ায় এবার মেলায় বাড়ছে একটি দিন। ১৮ বছর পরে ফের বাংলা একাডেমিই ব্যবস্থাপনা করছে পুরো আয়োজন।
বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘২০০৬ সালের আগপর্যন্ত বাংলা একাডেমি নিজেরাই সবকিছু করত। পরে মাঝে মাঝে মেলার ব্যাপ্তি বেড়ে যাওয়ায় আমরা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাছে যাই। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। তখন নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমরা করব।’
এবার মেলায় যাতায়াতে যুক্ত হয়েছে মেট্রোরেল। কিন্তু মেলা উপলক্ষে মেট্রোর বিশেষ কোনো সার্ভিস দেওয়া হবে কি না, এ ব্যাপারে বাংলা একাডেমি কোনো সিদ্ধান্ত জানাতে পারছে না।
ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক জানান, তাঁরা এখন সময় বাড়িয়ে শেষ ট্রেন মতিঝিল থেকে ৮টা ৪০ পর্যন্ত করেছেন। আস্তে আস্তে সময় আরও সমন্বয় করে বাড়ানো হবে। মেলা নিয়ে তাঁদের পরিকল্পনা আছে।
মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য এবং আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ওসমান গণি বলেন, ‘আগে উত্তরা-মিরপুর থেকে পাঠক আসতে সমস্যা হতো। যার কারণে মেলায় দর্শনার্থী কম হতো। এবার মেট্রোরেলের কারণে মেলায় গত বছরগুলোর তুলনায় পাঠক বেশি হবে বলে মনে করি। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের দিকের গেট খোলা রাখার ব্যবস্থা ছিল না। মানুষ এসে ফিরে যেত। এবার গেটটা খোলা থাকবে।’