রাজধানী ঢাকার পর এ বছর পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে ডেঙ্গুর হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কক্সবাজার শহর ও টেকনাফ-উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা শিবিরের নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকায় এডিস মশাবাহিত এ রোগের প্রকোপ বেশি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখানে আক্রান্ত ও মৃত্যুহার অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। তবে চলতি মাসে রোহিঙ্গা শিবিরে ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে কক্সবাজার শহরের প্রকোপ কমেনি।
চিকিৎসকেরা বলছেন, ডেঙ্গুতে আতঙ্কিত না হয়ে জনসচেতনতা বাড়িয়ে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। মূলত পর্যটন নগরী হওয়ায় যত্রতত্র প্লাস্টিকবর্জ্য, ময়লা-আবর্জনার স্তূপ থাকায় মশার বংশবিস্তার বেড়েছে।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৫ হাজার ৩৪৯ জন। তাদের মধ্যে ২৭ রোহিঙ্গাসহ ৩৩ জনের মৃত্যু হয়। আক্রান্তদের মধ্যে রোহিঙ্গা শিবিরের ১৩ হাজার ৮৮৬ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে জানা গেছে, উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের মধ্যে ক্যাম্প ৩, ৪, ১১, ২৪ ও ২৬ নম্বরে আক্রান্তের হার বেশি। এ ছাড়া কক্সবাজার শহরের বৈদ্যঘোনা, সমিতি পাড়া, কুতুবদিয়া পাড়া, টেকপাড়া, নুনিয়ার ছড়া ও টেকনাফ পৌর এলাকায় প্রকোপ রয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ৭৯৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ছিল। সবাই রোহিঙ্গা নাগরিক। এরপর জুন মাসে ৩ হাজার ৭৪৮ জন, জুলাইয়ে ৫ হাজার ২১ জন, আগস্টে ৩ হাজার ৬৬৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। সেপ্টেম্বরে এ সংখ্যা কমে ১ হাজার ৬৯৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের চিকিৎসা সমন্বয়ক আবু তোহা ভূঁইয়া বলেন, ক্যাম্পগুলোতে জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত আক্রান্তের হার ভয়ানক অবস্থায় ছিল। গত মাস থেকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন মহিউদ্দিন আলমগীর বলেন, জুন, জুলাই ও আগস্টে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি ছিল, এখন কমে আসছে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোমিনুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে কক্সবাজার শহরে প্রকোপ কিছুটা রয়েছে।
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, প্রতিদিন মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে; পাশাপাশি নালা পরিষ্কার ও জনসচেতনতা বাড়ানোর কাজ চলছে।