হোম > ছাপা সংস্করণ

গণকবরের ওপর চালের গুদাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। সকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্থনের খবর শুনতে ব্যাকুল সিলেট নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকার বাসিন্দা ডা. দীগেন্দ্র চন্দ্র এন্দ।

ছোট্ট একটি টিনশেড ঘরের একটি কক্ষে চৌকিতে রাখা রেডিও বাজছিল। খবর শুনতে রেডিও ঘিরে কয়েকজন জড়ো হয়েছিলেন।

হঠাৎ একটি মর্টার শেল লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে ঘরের সেই কক্ষে গিয়ে পড়ে, যেখানে রেডিও বেজে চলেছে। মুহূর্তেই কালো ধোঁয়া কুণ্ডলী পাকিয়ে পুরো ঘর অন্ধকার করে ফেলে।

ঘরের মেঝে বেয়ে তাজা লাল রক্ত গলির রাস্তা পর্যন্ত গড়িয়ে আসে। চিৎকার-আর্তনাদে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। প্রতিবেশীরা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও কয়েকজনের মৃত্যু হয়। কিন্তু ধর্মীয় রীতি মেনে একজনকে দাহ করা হলেও শহীদ নয়জনের মধ্যে সাতজনেরই হয়েছে গণকবর।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপনের সময়ে এখন অনেকটা অজানা সেই স্মৃতি। নেই গণকবরের কোনো চিহ্ন। মেলেনি শহীদদের স্বীকৃতিও। বরং গণকবরের জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে চালের গুদাম। সামনে বাণিজ্যিক স্থাপনা।

মির্জাজাঙ্গাল এলাকায় মণিপুরী রাজবাড়ীর মন্দিরের বিপরীতে ডা. দীগেন্দ্র পরিবারের সাত সদস্যকে সমাহিত করার স্থানে গিয়ে দেখা গেছে, বাণিজ্যিক স্থাপনা দিয়ে জোড়া হয়েছে গণকবরের স্মৃতিময় সেই স্থান। গণকবরের ওপরে এখন চালের গুদাম। কোথাও নেই কোনো স্মৃতিচিহ্ন।

২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মির্জাজাঙ্গাল এলাকায় শহীদদের স্মরণে ‘লেখা আছে অশ্রু জলে’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেছিলেন, ‘নগরীর ভেতর এই গণকবরের কথা আমার জানা ছিল না। যেহেতু এখন জানতে পেরেছি, অবশ্যই এটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেব। এই মাসেই শহীদ পরিবার, জায়গার মালিকপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বসব।’ কিন্তু মেয়রের সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হয়নি এখনো।

ভারতের কলকাতার যাদবপুরে বাস করছেন ডা. দীগেন্দ্র চন্দ্র এন্দের বড় ছেলে বাপ্পু এন্দ। তিনি বলেন, ‘আমরা আসলে ব্যর্থ হয়েছি। পরিবারের প্রায় সবাইকেই হারিয়েছি।

জায়গাটির মালিক আমরা না হওয়ায় সেই স্মৃতিটুকুও ধরে রাখতে পারিনি। সরকার ছাড়া এখানে আর কারও কিচ্ছু করার নাই।’

ওই জায়গার মালিক সিলেটের বিশ্বম্ভর আঁখড়ার পরিচালক উজ্জ্বল দাস বলেন, ‘শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণের লাগিতো জায়গা ছাড়িয়া দেওয়া অইছে। বাণিজ্যিক এলাকাতে চালের গুদাম থাকবেই। আগে যারা ছিল তারা তো গণকবরের ওপরে বসতভিটা বানাইছে। তখন তো কেউ কিচ্ছু বলেননি। ওখন আমরা জায়গা ছেড়ে দিয়েছি এ জন্য বিভিন্নজনই প্রশ্ন তুলছেন। যাই হোক, এটা নিয়ে একটি সুন্দর সমাধান হয়েছে। আপাতত এখানেই স্থপতি রাজন দাসের মাধ্যমে একটি শহীদ মিনার বানানো হবে। পরে দেখা যাবে আরও জায়গা ছেড়ে দেওয়া যায় কি না। বছর তিনেকের মধ্যে রাস্তাকেও বড় করা হবে।’

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন