নরসিংদীর রায়পুরার মির্জারচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও যুবলীগের সভাপতি মো. জাফর ইকবাল মানিক (৫৫) হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। গত সোমবার রাতে নিহতের স্ত্রী মাহফুজা আক্তার বাদী হয়ে মো. ফারুক আলীকে প্রধান আসামি করে ২১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৭ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়। আসামি মো. ফারুক আলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজ মিয়ার ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাঁশগাড়ি তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মীর মাহবুব।
নিহতের স্ত্রী মাহফুজা আক্তার বলেন, ‘পূর্বশত্রুতার জেরে মো. ফিরোজ মিয়ার সঙ্গে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমার স্বামীর সঙ্গে তাঁদের দ্বন্দ্ব ছিল। শুক্রবার এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অনুরোধে দুই পক্ষ বৈঠক করে। এতে কোনো সমঝোতা না হওয়ায় বৈঠক থেকে উঠে যায় প্রতিপক্ষ ফিরোজের লোকজন। পরদিন শনিবার খবর আসে, চাঁদপুর থেকে কয়েকজন আসছেন দেখা করার জন্য। পরে চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌঁছার পর সন্ত্রাসীরা পরপর ছয়টি গুলি করে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসনের কাছে দ্রুত স্বামী হত্যার বিচার চাই।’
উল্লেখ্য, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজ মিয়া। তাঁর সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি জাফর ইকবাল মানিক। এরই জেরে দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। পরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর থেকে এলাকাছাড়া ছিলেন ফিরোজসমর্থিত লোকজন। ২ ডিসেম্বর এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অনুরোধে দুটি পক্ষ আপস মীমাংসার জন্য সালিসিতে বসেন। কিন্তু আপস না মেনে মিটিং ছেড়ে উঠে যান ফিরোজের লোকেরা। শনিবার বিকেলে শান্তিপুর বাজারে যান মানিক। এ সময় তাঁকে লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তরা কয়েকটি গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে তাঁকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।