সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর ওপর আব্দুজ জহুর সেতু। জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলার মানুষ এই সেতু দিয়ে চলাচল করে; কিন্তু সেতুতে অবৈধ মোটরসাইকেলের স্ট্যান্ড থাকায় বিপাকে পড়তে হয় চলাচলকারীদের। অন্যদিকে সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে সেতুর।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ২০১৫ সালে সেতু উদ্বোধনের শুরুর দিকে সড়ক প্রশস্ত ছিল; কিন্তু ধীরে ধীরে সেতুর দুই পাশজুড়ে সিএনজি দাঁড় করে রাখায় সংকুচিত হতে থাকে জায়গা। অ্যাপ্রোচ সড়কে যানজট লেগেই থাকে। সম্প্রতি পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সেতুর ওপর থেকে সিএনজি স্ট্যান্ড সরিয়ে ফেলে মালিক সমিতি; কিন্তু নতুন করে বসেছে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড।
সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলকারী টুকেরবাজার এলাকার আব্দুল বাছির বলেন, ‘এত সুন্দর একটা সেতু! বিকেল হলেই আমরা ঘুরতে আসি। বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজন নিয়ে আশপাশের মানুষ সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে। সিএনজি স্ট্যান্ড তুলে দেওয়ার পর এখন এসেছে মোটরসাইকেল। এতে করে আমাদের এই সুন্দর সেতুর প্রবেশমুখটা অনেকটাই অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে।’
সিএনজি অটোরিকশাচালক সমছু মিয়া বলেন, ‘আমরা সেতুতে আগে ছিলাম। প্রশাসন থেকে বলামাত্রই সরে এসেছি। এখন মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড বসছে। আইন কি শুধু আমরার লাগি?’
দেখা গেছে, মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড গড়ে ওঠায় দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বেড়েছে। শিশুরা লাইসেন্স ছাড়াই মোটরসাইকেলে করে যাত্রী আনা-নেওয়া করছে। এতে করে প্রতিনিয়তই সেতুর মুখে চালকদের সঙ্গে যাত্রীদের ঝগড়া হচ্ছে।
ভাড়ায়চালিত টরসাইকেলচালক জুবের আহমদ বলেন, ‘আমরা সেতুর নিচে থাকলে যাত্রী পাব না। তাই সেতুর ওপরে অবস্থান নিয়েছি।’ সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ছুরত আলী বলেন, ‘সেতুর ওপরে থেকে আমরারে সরানো হইছে; কিন্তু এখন আবার দেখা যায় মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড বইছে। আমরা তো আইনের প্রতি সম্মান দেখাইছি। তবে এখন আবার যদি মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড বসানো হইলো, তাইলে সমান অধিকার দেওয়া হইলো কেমনে।’
তবে পুলিশ প্রশাসন সেতুর প্রবেশমুখ পরিষ্কার রাখতে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানালেন কর্মকর্তারা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, ‘সেতুর প্রবেশমুখে যাতে কোনো ধরনের যানবাহন না থাকে সে জন্য আমরা সার্বক্ষণিক তদারকিতে রাখছি। যেকোনো যানবাহন এখানে থাকলেই আমরা মামলা দিচ্ছি।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুজ জহুর। তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অগ্রভাগের একজন সংগঠক ছিলেন। এই প্রবীণ রাজনীতিবিদের নামে নামকরণ করা হয় সুনামগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ সেতুটির।