হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
ইরাকের বাগদাদে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত নোয়াখালীর হাতিয়ার তরুণ মো. নীরবের (২৪) লাশ দেশে আনা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে তাঁর পরিবার। একাধিকবার বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা হয়নি বলে জানা গেছে। তিন দিন ধরে ইরাকের একটি হাসপাতালের মর্গে তাঁর লাশ পড়ে আছে।
নিহত মো. নীরব (২৪) নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চানন্দী ইউনিয়নের নলেরচর থানারহাট এলাকার জামাল হোসেনের ছেলে। গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে ইরাকের বাগদাদে দুর্বৃত্তদের গুলিতে তিনি নিহত হন। এদিকে নীরব নিহত হওয়ার সংবাদ পেয়ে মা সকিনা খাতুন ছেলের মৃত্যুর খবরে প্রায় বাকরুদ্ধ। মাঝে মধ্যে তিনি ছেলের দেখার দেখার আকুতি জানাচ্ছেন।
নীরবের বড় ভাই ব্যবসায়ী রিয়াজ উদ্দিন বলেন, নীরব নিহত হওয়ার পর তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন পাসপোর্ট ও অন্যান্য কাগজপত্র ইরাকে বাংলাদেশ দূতাবাসে জমা দিয়েছেন। কিন্তু দূতাবাসের লোকজন আন্তরিকভাবে বিষয়টি দেখছেন না। অন্যদিকে নীরব যে প্রতিষ্ঠানের হয়ে ইরাকে কাজ করতেন, এর লোকজনও সহযোগিতা করছেন না। এখন নীরবের পরিবার বাংলাদেশে ইরাকের দূতাবাসে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন।
নীরবের স্বজন মো. ইলিয়াছ বলেন, জীবিকার সন্ধানে গত চার বছর আগে ইরাকে যান নীরব। পরে বাগদাদ শহরে একটি প্রতিষ্ঠানের অধীনে শ্রমিকের কাজ নেন। গত মঙ্গলবার রাতে ওই প্রতিষ্ঠানের ছয় শ্রমিকসহ বাগদাদের আবদুল কাদের জিলানীর কবর জিয়ারত করতে যান নীরব। কবর জিয়ারত করে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টার দিকে কর্মস্থলে ফেরার পথে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন।
এ সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান নীরব। পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ের কথাবার্তা হওয়ায় এক বছর পর দেশে আসার কথা ছিল তাঁর। ইরাকে থাকা এলাকার লোকজনের মাধ্যমে নীরবের লাশ দেশের আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে নীরবের লাশ দেশে আনার বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা শুনেছি। এ বিষয়ে নিহতের স্বজনদের একটি লিখিত আবেদন দিতে বলেছি। আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। সেখান থেকে সহযোগিতা করে লাশ দেশে আনার ব্যবস্থা করা হবে।’