ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান
রমজান ধৈর্য ও সহমর্মিতার মাস। এ মাসের প্রধান ইবাদত রোজা রাখা। রোজা পালনে একজন মানুষকে বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। যেমন তাকে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও যৌনাচার থেকে বিরত থাকতে হয়। সারা দিন না খেয়ে কাটানো কত কষ্টের এ বিষয়টি কেবল রোজার মাধ্যমেই অনুধাবন করা সম্ভব। দুর্বল চিত্তের মানুষেরা বলেন, রোজার কারণে গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণা বাড়তে থাকে, তাই আমি রোজা থাকতে পারি না।
এসব নিতান্তই অজুহাত মাত্র। কারণ রোজা আমাদের শরীরে যেমন নতুন কোনো রোগ সৃষ্টি করে না, তেমনি পুরোনো রোগও রোজা পালনে প্রতিবন্ধক হয় না। বরং রোজার মাধ্যমে অনেক রোগ শরীর থেকে চলে যায়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, সারা বছর বিভিন্নভাবে আমাদের শরীরে অনেক খারাপ চর্বি বা কোলেস্টেরল জমা হয়, যা একসময় হার্ট অ্যাটাক ঘটাতে পারে। রোজা পালন করলে চর্বিগুলো ব্যক্তির শরীর থেকে আস্তে আস্তে ক্ষয় হয়ে যায়। তাই রোজা আমাদের স্বাস্থ্যসচেতন করে তোলে।
রোজা পালনের মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রচুর পানি ও শর্করার চাহিদা বেড়ে যায়। তাই আমরা ইফতারিতে বিশুদ্ধ পানির পাশাপাশি খেজুর, দুধ ও রসাল ফল রাখি। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘তোমরা খেজুর ও এক ঢোক দুধ অথবা পানি দিয়ে ইফতার করো।’ আর এসব খাবারে প্রচুর শর্করা, আমিষ ও পানি রয়েছে। অনুরূপভাবে সাহ্রি খেয়ে রোজা রাখার জন্য মহানবী (সা.) জোরালোভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সাহ্রিকে বরকতময় খাবার হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। তোমরা কখনো সাহ্রি ত্যাগ করবে না।’ (আবু দাউদ) কারণ সাহ্রি না খেয়ে রোজা রাখলে রোজাদার সারা দিনে ক্লান্ত বা অসুস্থ হতে পারে। এ থেকে প্রতীয়মান হয়, রোজায় স্বাস্থ্যসচেতনতার ব্যাপারে ইসলাম তার সুস্পষ্ট বক্তব্য উপস্থাপন করেছে।
ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়