যমুনা নদীর তীব্র স্রোতে মাঝপথে বন্ধ হয়ে গেছে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরে নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ। ফলে যমুনার ভাঙনে গত কয়েক সপ্তাহে সিরাজগঞ্জের বেশ কয়েকটি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, নদীতে আগাম পানি বাড়ায় প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে আগামী সপ্তাহে কাজ পুনরায় শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জবাসীকে প্রতিবছর নদীভাঙনের মুখে পড়তে হয়। এ কারণে ভাঙন ঠেকাতে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুড়ী ইউনিয়নের পাচিল পর্যন্ত এলাকার নদী ডান তীর রক্ষায় প্রকল্প গ্রহণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকার জন্য প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার এই প্রকল্প কাজের কার্যাদেশও দেওয়া হয় গত বছরের নভেম্বরে। পরবর্তী সময়ে এর কাজ শুরু হলেও যমুনা নদীতে দফায় দফায় পানি বাড়তে থাকে। এ কারণে চলতি বছরের জুনের মাঝপথে তা বন্ধ হয়ে যায়।
প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর ভাঙনে নিঃস্ব হয় নদীপারের মানুষ। চলতি মাসে শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নে তীব্র নদীভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনে প্রায় ২০টি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে তা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, ঠিকাদার সঠিক সময়ে কাজ শুরু করলেও পানির স্রোতে নদীতে তলিয়ে যায় জিও ব্যাগ। নদীতে দফায় দফায় পানি বাড়ায় বন্ধ রাখতে হয়েছে প্রকল্পের কাজ।
শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নে জালালপুর গ্রামের সাজেদা বেগম বলেন, ‘নদীভাঙন আমার সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে নিজ বাড়িতে বাস করতাম। এবারের ভাঙনে সেই বসতভিটা চলে গেল। অসুস্থ স্বামী নিয়ে এখন কোথায় যাব, কী করব বুঝতে পারছি না।’
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল বলেন, গত বছর থেকেই জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। তবে আগাম পানি আসার কারণে চর ডুবে যাওয়ার সেখান থেকে বালু নিয়ে জিও ব্যাগ তৈরি করা হয়নি। এ জন্য তাঁরা কম জিও ব্যাগ ফেলেছেন। পানি নামার পর ভাঙন এলাকায় বালু ফেলে ঠিক করা হবে। মাঝের চর কেটে দিয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা হবে। তখন আর ভাঙন থাকবে না।