Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

‘কিলা বাঁচমু, সবতা শেষ’

ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সুনামগঞ্জ থেকে ফিরে

‘কিলা বাঁচমু, সবতা শেষ’

ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত সুনামগঞ্জ। অধিকাংশ মানুষের বাড়িঘরের পানি নামেনি। এবারের বন্যায় তাদের ধান, ঘরবাড়ি ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সব নষ্ট হয়ে গেছে। কারও কারও ঘর ভেসে গেছে বন্যার পানিতে। এখনো এখানকার মানুষেরা পরিবার-পরিজন ও গবাদিপশু নিয়ে রাস্তায় থাকছেন। তবে তাঁরা ঠিকমতো পাচ্ছেন না খাবার। মানুষের দেওয়া ত্রাণ দিয়ে কোনোভাবে চলছে। খেয়ে না-খেয়ে দিন যাচ্ছে এসব মানুষের। অনেকেই আবার বন্যা শুরুর প্রথম তিন দিন কোনো খাবার পাননি। এই সময়ে তাঁরা শুধু পানি খেয়ে দিন কাটিয়েছেন। এ কারণে রাস্তায় কোনো গাড়ি থামলেই জড়ো হয়ে যায় অনেক মানুষ। নিজেদের কষ্টের কথা তুলে ধরেন তাঁরা। বলেন, ‘আমরা কিলা বাঁচমু (কীভাবে বাঁচব)। আমরার সবতা শেষ।’ ছোট ছোট বাচ্চারা শুধু হাতের দিকে তাকিয়ে থাকে। তাঁদের দৃষ্টিতে থাকে শুধু ত্রাণের জন্য প্রতীক্ষা।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের বেশির ভাগ অংশে দেখা গেছে, বন্যাদুর্গত মানুষেরা ধান রাস্তায় শুকাচ্ছেন। সেই সঙ্গে তাঁরা রাস্তায় ছোট ছোট ঘর বানিয়েছেন। এখানেই একসঙ্গে থাকছেন গবাদিপশুসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পাগলা বাজার থেকে হাছন রাজার তোরণ, মদনপুর-দিরাই, কাঠইর-জয়নগর ও সুনামগঞ্জ-সাচনাবাজার, সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুর সড়কের যে স্থানের পানি নেমেছে সবখানেই এমন দৃশ্য।

সরেজমিনে সুনামগঞ্জ ঘুরে দেখা গেছে, শহরের অধিকাংশ এলাকার পানি নেমে গেছে। নবীনগর, আরপিননগর, পশ্চিম হাজীপাড়া, কালীপুর, পূর্ব নতুনপাড়া, শান্তিবাগ, হাসননগর, বড়পাড়া, হাসনবসত এলাকায় এখনো পানিবন্দী। তবে পুরো শহরজুড়ে ময়লা-আবর্জনায় পচা দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে হবতপুর গ্রামের রাহেমা বেগম বলেন, ‘আইজ ৭ দিন। ভাত খাইছি না। ফাইন্নে (পানিতে) ঘরবাড়ি সবতা ভাসাইয়া লইয়া গেছেগি। ওখন গন্ধে (দুর্গন্ধ) তাখা (থাকা) যার না।’ ইকবাল নগরের জহুরা বিধি বলেন, ‘ফানির ফুতে (পানি স্রোতে) সব লইয়া গেছেগি। ওখন কিলা বাঁচমুরে বাবা? আমার তো খেউ নাই।’

শুধু শহর নয়; পুরো সুনামগঞ্জই এখন দুর্গন্ধের জনপদে পরিণত হয়েছে। পানিতে নিমজ্জিত হওয়া ধান, বিছানাপত্র, কাপড়-চোপড়, ময়লা-আবর্জনা ইত্যাদি পচে এই দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ডায়রিয়াসহ পানি বাহিত রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

২৫০ শয্যা সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) আমাদের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৬৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেওয়া সবাই বলছে, হাত চুলকায়, পা চুলকায়। ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগ বাড়ছে। তবে এখনো মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছায়নি। এর আসল চিত্র পাওয়া যাবে আগামী সপ্তাহে। মাত্র পানি নামছে। মানুষ বাসাবাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে।’

সিভিল সার্জন আহম্মদ হোসেন বলেন, ‘ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগ বাড়ছে। আমাদের প্রতিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪-৫ জন করে রোগীও ভর্তি আছে। তবে এখনো ব্যাপকভাবে বাড়েনি।’

সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বলেন, ‘মাত্র পানি নামতে শুরু করেছে। শহরের প্রত্যেকটি বাসায় ৫-৬ ফুট পানি ছিল। সবার বাসার সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। এখনো মধ্য শহরসহ অনেক এলাকায় পানি রয়েছে। আরও অন্তত এক সপ্তাহ সময় লাগবে পুরো শহরের পানি নামতে।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ