নাটোরের লালপুরে অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক না কাটতেই গবাদিপশুর ভাইরাসজনিত চর্মরোগ লাম্পি স্কিন ডিজিজের (এলএসডি) প্রকোপ দেখা দিয়েছে। উপজেলায় বসতবাড়িতে ও খামারে লালন-পালন করা ৮ থেকে ৯ শতাধিক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খামারি ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলা জানা গেছে, কিছুদিন হলো গবাদিপশু চর্মরোগে আক্রান্ত হতে শুরু করে। প্রথমে গরুর চামড়ার উপরিভাগে টিউমারের মতো উপসর্গ দেখা যায়, পরে তা মানুষের শরীরে হওয়া পক্সের মতো গুটি গুটি হয়ে গরুর সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। দুই-তিন দিনের মধ্যে তা বড় বড় হয়ে ফেটে ঘায়ে পরিণত হচ্ছে। রোগাক্রান্ত গরু খাবার খাচ্ছে না। অনেক গরুর বুকের নিচে হওয়া গুটিতে পানি জমে ক্ষতের সৃষ্টি হচ্ছে। পরে সেখান থেকে মাংস খসে পড়ছে।
প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১৪১টি খামার ও কৃষক পর্যায়ে প্রায় ১ লাখ ৫৩ হাজার গরু রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার বিলমাড়িয়া, ওয়ালিয়া ও আড়বাব ইউনিয়নে গরুর ভাইরাসজনিত রোগ লাম্পির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এসব এলাকার ৮ থেকে ৯ শতাধিক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এ রোগের নির্দিষ্ট কোনো ভ্যাকসিন নেই। তবে এ রোগ নিরাময়ে আক্রান্ত এলাকায় গোটপক্স নামের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫৫ হাজার গবাদিপশুকে এই টিকা দেওয়া হয়েছে।
রামকৃষ্ণপুর গ্রামের রোকনুজ্জামান বলেন, তাঁর বাড়ির একটি গরু চর্মরোগে আক্রান্ত হয়। পশু চিকিৎসকের পরামর্শে ইনজেকশন, অ্যান্টিবায়োটিক ও প্যারাসিটামল ওষুধ খাওয়াচ্ছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চন্দন কুমার সরকার বলেন, এ রোগ। প্রাথমিকভাবে অ্যান্টিপাইরেটিক ও অ্যান্টিহিস্টামিন দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। নডিউল বা গুটি ফেটে গেলে বা সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন দমন করার জন্য সিস্টেমিক অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়। এ ছাড়াও ফেটে যাওয়া গুটিতে যেন মশা-মাছি বসতে না পারে, সে জন্য ফ্লাই রিপিলেন্ট ব্যবহার করা যায়।