হুসাইন আহমদ
নিয়ত শব্দের অর্থ ইচ্ছা, স্পৃহা, মনের দৃঢ়সংকল্প। আরেক অর্থে নিয়ত আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানের লক্ষ্যে কোনো কাজের দিকে মনোনিবেশ করা। আবার মনে কোনো জিনিসের প্রতি লক্ষ্য আরোপ ও তা বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়াকেও নিয়ত বলা হয়। এই নিয়তের গুরুত্ব সবক্ষেত্রেই অসামান্য।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়ার নিয়ত রাখবে, আমি তাকে দুনিয়ায় যতটুকু ইচ্ছা প্রদান করব, এরপর তার জন্য জাহান্নাম নির্ধারণ করব, এতে সে দুর্দশাগ্রস্ত বিতাড়িত অবস্থায় প্রবেশ করবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি পরকালেরও নিয়ত রাখবে এবং এর জন্য যেমন চেষ্টার প্রয়োজন তেমন চেষ্টাও করবে; যদি সে মুমিন হয় এরূপ লোকের চেষ্টা কবুল হবে।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ১৮-১৯)
হাদিসে নিয়তের গরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে, ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সব কাজের ফলাফল নিয়তের ওপরে নির্ভরশীল। আর প্রতিটি লোক (পরকালে) তা-ই পাবে, যা সে নিয়ত করেছে। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহ ও রাসুলের উদ্দেশ্যে হিজরত করে, তার হিজরত আল্লাহ ও রাসুলের উদ্দেশ্যেই হবে। আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার কোনো স্বার্থ উদ্ধারের নিয়তে হিজরত করে, মূলত তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই হবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)
কোরবানিদাতার নিয়ত হতে হবে এখলাসপূর্ণ; একমাত্র আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই কোরবানি করতে হবে। মাংস খাওয়া বা মানুষের সামনে বড়লোকি জাহির করার কোনো বাসনা অন্তরে থাকতে পারবে না। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর কাছে ওগুলোর গোশতও পৌঁছায় না, রক্তও পৌঁছায় না; বরং তাঁর কাছে তোমাদের তাকওয়াই পৌঁছায়।’ (সুরা হজ: ৩৭)
লেখক: শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক