আজকের পত্রিকা ডেস্ক
কুমিল্লায় গোমতী নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ফলে ঘরে ফিরে যাচ্ছে মানুষ। তবে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই।
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার গোমতীর পানি বিপৎসীমার তিন সেন্টিমিটার নিচে নেমে গেছে। নষ্ট হওয়া বাঁধের ২০টি স্থান চিহ্নিত ও মেরামত করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন বলছে, গোমতীর চর প্লাবিত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণসহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মো. ওয়ালিউজ্জামান বলেন, গতকাল গোমতীর টিক্কারচর পয়েন্টে ৭ দশমিক ৪ সেন্টিমিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়। এখানে বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। পানি বিপৎসীমার ৩ দশমিক ৭১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কয়েক দিন আগে টিক্কারচর পয়েন্টে ৯ দশমিক ৯ সেন্টিমিটার উচ্চতায় গোমতীর পানি প্রবাহিত হয়।
গতকাল সরেজমিন দেখা গেছে, গোমতীর পানি কমে যাওয়ায় আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর, সংরাইশ, শুভপুর, চানপুর, কাপ্তানবাজার, বুড়িচং উপজেলার বালিখাড়া, কামারখাড়া, দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ গঙ্গামন্ডল, রঘুরামপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি সরে গেছে। ফলে চরের বাসিন্দারা ঘরে ফিরতে শুরু করেছে।
দুপুরে দেবিদ্বারের জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের রঘুরামপুর ও গঙ্গানগর ঘুরে দেখা গেছে পানি কমলেও কমেনি দুর্ভোগ। পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই। কেউ নতুন করে মাটির চুলা বানাচ্ছেন। আবার কেউ মাটির ঘর মেরামত করছেন।
জাফরগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহিদ আলম বলেন, ‘গোমতীর পানি কমতে শুরু করেছে। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। গ্রামের ভেতরের রাস্তাঘাট ভাঙা। এগুলো দ্রুত মেরামত করা হবে। অনেকেই পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তাঁদের চিকিৎসা নিতে বলা হয়েছে।’
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘গোমতীর পানি বেড়ে চরাঞ্চলের ৪৫০ হেক্টর জমির আউশ ধান ও ২৮৭ হেক্টর সবজিখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা কৃষকদের তালিকা করে রেখেছি। প্রণোদনা এলে তাঁদের সহযোগিতা করা হবে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ‘কয়েক দিন গোমতীর বাঁধ ভাঙনঝুঁকিতে ছিল। বিভিন্ন স্থানে গর্ত তৈরি হয়ে পানি চুইয়ে আসছিল। তাৎক্ষণিকভাবে এগুলো মেরামত করা হয়েছে। গোমতীর চর প্লাবিত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণসহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’