হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
‘ঘরে বাজার নাই, ৫০০ ট্যাহা একজনের কাছে ধার কইরা লইয়া বাজারে আইছি। ১ কেজি বড় মাছ, দুইডা কুমড়া আর ২ মোডা শাখ কিনতেই সব ট্যাহা শেষ। যে ট্যাহা দিয়া আগে বাজার করলে ব্যাগ ভইরা বাজার নিওন গেছে, সেই ট্যাহা দিয়া এখন অর্ধেক ব্যাগ ভরে না।
বাজারে গেলে এহন মাথায় ধরে না—কি রাইখা কি কিনমু।’ এমন আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার গোরকপুর এলাকার শহর আলী (৫৮)। তিনি পেশায় একজন ভ্যানচালক। এ বয়সে ভ্যান চালিয়ে পাঁচজনের সংসার চালান তিনি।
শহর আলী আরও বলেন, ‘অভাবের সংসার আমার। চারদিকে সব কিছুর দাম বাড়ছে। গত কয়েক দিন ধইরা টেনেটুনে চলছে সংসার। এই বাজার নিয়ে গেলে কয়দিন চলবে? তারপরও চালাতে হচ্ছে। খরচ তো প্রতিদিন বাড়ছে; কিন্তু আয় তো বাড়ে না।
বাজারে কথা হয় দিনমজুর অলিল মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা কামলারা (দিনমজুর) আর ভালা কেমনে থাহি। আগে তেল কিনছি কেজি ১৪০ ট্যাহা দিয়া, আইজ নিলাম ১৯০ ট্যাহা দিয়া। লবণ কিনতাম কেজি ১৮ ট্যাহা, এহন নিলাম ২৫ ট্যাহায়, চাউল তো আরও বাড়তি ৫৫-৬০ ট্যাহা কেজি। এক মোডা শাখ কিনতাম ৫ ট্যাহা দিয়া, হেইডা আইজ কিনলাম ১৫ ট্যাহা দিয়া, সব জিনিসের দাম বেশি। কিন্তু আমাগো মজুরির দাম তো বাড়ে নাই। আমরা কেমনে চলুম। আগে কামলা দিয়ে ৬০০ ট্যাহা পায়তাম, এহনও ৬০০ আছে।’
মোকামিয়া গ্রামের হযরত আলী বলেন, ‘চার সদস্যের সংসার তাঁর। প্রতিবছর রোপা আমান মৌসুমে ৮০ শতাংশ জমিতে বর্গাচাষ করেন। এই জমি থেকে উৎপাদিত ফসলে এবং পাশাপাশি অন্যের জমিতে কাজ করে কোনোরকম চলে তার সংসার। দুই সন্তানের পড়াশোনার খরচও চলে।’ আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘আগে জমি থেকে যে ধান পাইতাম তা দিয়ে সংসার চলত। এখন সব কিছুর দাম বাড়তি।’
ধুরাইল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ওয়ারিছ উদ্দিন সুমন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে অসহায় গরিব মানুষদের সরকারি সব ধরনের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে আমার ইউনিয়নে ১ হাজার ৭০০ কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।