Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

সাকারে সয়লাব বুড়িগঙ্গা

নাজিম উদ্দিন ইমন, কেরানীগঞ্জ (ঢাকা)

সাকারে সয়লাব বুড়িগঙ্গা

গত বছর শীতের শুরুতেই বুড়িগঙ্গায় ব্যাপকভাবে দেখা মেলে বিদেশি মাছ সাকার। পরে বর্ষায় নদীতে এই মাছের দেখা মেলে না। সাধারণ মানুষ ধরেই নিয়েছিল, বর্ষায় স্রোতে বুড়িগঙ্গা থেকে হয়তো সাকার চলে গেছে। তবে এবার শীত মৌসুমের শুরুতে বুড়িগঙ্গার পানি কমতে থাকায় ব্যাপক দেখা মিলছে সাকার মাছ।

নদীর পাড়ের মানুষেরা বলছেন, গতবারের চেয়ে এবার বেশি সাকার মাছ চোখে পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা মতে, এই বছর বুড়িগঙ্গায় বিচরণ করছে লাখ টনের বেশি সাকার মাছ।

কেরানীগঞ্জের বুড়িগঙ্গা পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, নদীর সব জায়গায় খাবি খাচ্ছে সাকার মাছ। সাকার সম্পর্কে জানা না থাকলে নদীতে প্রচুর পরিমাণে শিং-মাগুর মাছ রয়েছে বলে মনে হতে পারে। তবে ইদানীং বুড়িগঙ্গা ছাড়াও নদীর আশপাশের জলাশয়ে মিলছে সাকার।

জানা গেছে, বিদেশের ‘সাকার মাউথ ক্যাট ফিশ’ দেশে সংক্ষেপে সাকার মাছ নামে পরিচিত। তবে স্থানীয়দের কাছে এটি ‘চেগবেগা’ মাছ বলেই বহুল প্রচলিত। এ পর্যন্ত দেশে সাকারের দুটি ধরন পাওয়া গেছে। একটি সাদা রঙের ওপর ছোপ ছোপ দাগ, অপরটির কালোর ওপর সাদা ডোরাকাটা দাগ রয়েছে। মূলত সৌন্দর্যের জন্য অ্যাকুরিয়ামে পালিত হয় সাকার। তবে বর্তমানে দেশের নদ-নদীতে ব্যাপকভাবে পাওয়া যাচ্ছে এই মাছ। বুড়িগঙ্গা নদীতে ছড়িয়ে পড়েছে সাকারের কালো রঙের জাত।

মৎস্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কঠিন প্রাণ সাকার মাছের পিঠে ও দুই পাশে বড় ধারালো পাখনা আছে। দাঁতগুলোও বেশ ধারালো। সাধারণত আগাছা, জলজ পোকামাকড় ও ছোট মাছ এদের প্রধান খাবার। তবে ছোট মাছ ও জলজ উদ্ভিদ খাওয়ার কারণে নদীতে অন্যান্য মাছের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। পানিদূষণের কারণে যেখানে অন্য মাছ বাঁচতে পারে না, সেখানে দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে এই মাছ। এমনকি পানি ছাড়াও প্রায় ২৪ ঘণ্টা বেঁচে থাকতে পারে সাকার।

উপজেলার আগানগর জেলেপাড়ার বাসিন্দা রনি বর্মণ বলেন, ‘একসময় নদী, খাল-বিলে মাছ ধরে সংসার চালাতাম। নদীতে মাছ কমে যাওয়ায় এখন আড়ত থেকে মাছ এনে বাজারে বিক্রি করি। শীত মৌসুমে দেশি মাছ পাওয়া যায় বলে আমরা বুড়িগঙ্গায় ঝাঁকি জালে মাছ ধরি। কিন্তু দুই বছর ধরে বুড়িগঙ্গায়ও মাছ ধরতে পারছি না। জাল ফেললেই চেগবেগা মাছ ওঠে। এ বছর চেগবেগা মাছের পরিমাণ বেশি দেখা যাচ্ছে। একবার নদীতে জাল ফেললে প্রায় ৩০-৪০ কেজি চেগবেগা উঠে আসে। কখনো কখনো জাল টেনে তোলা যায় না। নদীতে অন্য মাছের কোনো দেখা নেই।’

শুভাঢ্যা এলাকার বাসিন্দা নেসার রেজা বলেন, ‘আগানগর সেতু ঘাট থেকে খেয়ায় বুড়িগঙ্গা পাড়ি দেওয়ার সময় নদীতে প্রচুর শিং-মাগুর মাছকে খাবি খেতে দেখি। নদীতে এত মাছ কেউ ধরে না কেন?’ প্রশ্ন করলে নৌকা মাঝির জানান, এগুলো শিং-মাগুর নয়, সব চেগবেগা মাছ।

কেরানীগঞ্জর জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ‘ভিনদেশি অ্যাকুরিয়ামের মাছ সাকার খুব দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে। তবে স্রোত থাকা নদীতে এদের খুব একটা দেখা যায় না। তাই বর্ষা মৌসুমে দেখা না গেলেও শীত মৌসুমে বুড়িগঙ্গায় এ মাছের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। বর্তমানে উন্মুক্ত জলাশয়েও ব্যাপক হারে দেখা যাচ্ছে এই মাছ।

আমাদের ধারণা, বুড়িগঙ্গা নদীতে লাখ টনের বেশি সাকার বিচরণ করে। এটা আমাদের একটি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

সেলিম রেজা বলেন, মাছটি নিয়ে দ্রুত জাতীয় পর্যায়ে গবেষণা হওয়া দরকার। যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে এটা নির্মূল করা সম্ভব নয় বললেই চলে। তবে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেটা গবেষণা করে দেখা যেতে পারে।

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ