মেলামাইন ও প্লাস্টিক সামগ্রীর ভারে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে বিরামপুরের বাঁশ ও বেতশিল্প। একসময় গ্রামীণ জনপদে মানুষ বেত ও বাঁশের তৈরি বিভিন্ন সরঞ্জামাদি ব্যবহার করলেও এখন বিলুপ্তির পথে এ শিল্পটি। সময়ের বিবর্তনে বদলে গেছে চিরচেনা চিত্র।
বিরামপুর উপজেলার চাঁদপুর, মির্জাপুর, মুকুন্দপুর, বিশ্বনাথপুর ও কেটরাহাটসহ কয়েকটি গ্রামে মাহালী পরিবার জীবন ও জীবিকার তাগিদে বাঁশ আর বেতের শিল্পকে কোনো রকমে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন।
জানা যায়, মেলামাইন ও প্লাস্টিক সামগ্রীর কদর দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় কুটিরশিল্পের চাহিদা এখন আর নেই। তা ছাড়া দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে এ শিল্পের কাঁচামাল বাঁশ ও বেত। বাজারগুলো দখল করেছে প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের সামগ্রী। টেকসই ও স্বল্পমূল্যে পাওয়ায় সাধারণ মানুষের চোখ মেলামাইন ও প্লাস্টিক সামগ্রীর ওপর।
জানা যায়, একসময় দেশের বিস্তীর্ণ জনপদে বাঁশ-বেত দিয়ে তৈরি হতো গৃহস্থালি ও শৌখিন পণ্যসামগ্রী। বাঁশ-বেত কেটে গৃহিণীরা তৈরি করতেন হরেক রকমের পণ্য। এসব পণ্য বিক্রি করেই চলত তাঁদের জীবন।
এখনো গ্রামীণ উৎসব ও মেলাগুলোতে বাঁশ ও বেতের শিল্পীদের তৈরি খাল, চাটাই, খালুই, ধামা, টোনা, পাল্লা, মোড়া, বুকশেলফ কদাচিৎ চোখে পড়ে। তবে যতই দিন যাচ্ছে ততই কমে যাচ্ছে এই হস্তশিল্পের চাহিদা।
মির্জাপুর গ্রামের সুনিরাম পাহান বলেন, ‘বাঁশ-বেত শিল্পের দুর্দিনে হাতে গোনা কিছু পরিবার এই শিল্পকে আঁকড়ে ধরে আছে। অনেকে এ পেশা বদলে অন্য পেশায় চলে গেছে। কয়েকটি পরিবার কোনো রকমে বাপ-দাদার এই পেশা ধরে রেখেছে।’