পড়াশোনার পাশাপাশি ছোট থেকেই দুরন্তপনা। বাবার পুরোনো বাইসাইকেল নিয়ে এদিক-সেদিক ছুটে চলা। সাইকেল চালিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান ও স্থানীয়দের জীবন-জীবিকা সম্পর্কে ধারণা নেওয়া নেশায় পরিণত হয়। এ দুরন্তপনা জন্য তাঁর বন্ধু ও শিক্ষক থেকে শুরু করে সবাই ডাকেন ‘দুরন্ত সজিব’ বলে।
২০ বছর বয়সের কলেজপড়ুয়া ‘দুরন্ত সজিবের’ নাম মো. সজিব মিয়া। টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার বলিভদ্র ইউনিয়নের ইসপিঞ্জারপুর গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক মো. আবুল কালামের ছেলে। তিনি ধনবাড়ী সরকারি ডিগ্রি কলেজের স্নাতক (বিএসএস) প্রথম বর্ষের ছাত্র। তাঁর ফেসবুক ভ্রমণের ছবি প্রকাশ হওয়ায় সচেতন মহলে আলোচনায় উঠে আসেন তিনি। সাইকেল চালিয়ে হতে চান দেশের সেরা সাইকেলচালক।
গত ২৮ আগস্ট উত্তরবঙ্গের পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া থেকে কক্সবাজারের টেকনাফের উদ্দেশে ভ্রমণ শুরু করেন সজিব। বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন।
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে তাঁর বাবার পুরনো বাইসাইকেল নিয়ে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন হয়ে অষ্টগ্রাম, শ্রীমঙ্গল, সিলেট ও জাফলং ভ্রমণ করেন। এ কর্মকাণ্ডে খুশি হয়ে এক প্রবাসী উপহার হিসেবে তুলে দেন নতুন বাইসাইকেল। এটি নিয়েই এখন দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করছে সজিব।
সজিব বলেন, ‘গরিব পরিবারের সন্তান হলেও ভ্রমণ আমার খুব প্রিয়। দেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ও স্থানীয়দের জীবন-জীবিকা সম্পর্কে জানতে খুব আগ্রহ।
প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ ঘণ্টায় গড়ে শতাধিক কিলোমিটার অতিক্রম করতে পারি। সাইকেল চালিয়ে টুঙ্গিপাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত করতে চাই।’
সজিব আরও বলেন, ‘২০১৯ সাল থেকে দূর গন্তব্যে সাইকেলে বের হই। নিরাপদ স্থানে পলিথিন আর গাছের ডাল দিয়ে টং ঘর তৈরি করে রাত্রিযাপন করি।
সাইকেল চালিয়ে দেশের মধ্যে পরিচিত হতে চাই।’
সজিবের বন্ধু রেজুয়ান রিজভী বলেন, ‘স্কুল জীবন থেকেই সজিবকে দেখে আসছি তাঁর সাইকেলে ছোটাছুটি করার নেশা। আমাদের সঙ্গে যাওয়ার জন্য বলত।’
সজিবের মা মোছা. বিউটি বেগম বলেন, ‘পাঁচজনের পরিবার আমার। সংসারে আর্থিক-অনটন থাকায় ছেলেটাকে কোনো সহযোগিতা করতে পারি না। ছোট থেকেই সাইকেল নিয়ে ছোটাছুটি করা তাঁর স্বভাব। বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা ওর পছন্দ।’
ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসলাম হোসাইন বলেন, ‘কলেজপড়ুয়া সজিব তেঁতুলিয়া যাওয়ার আগে আমাকে তাঁর ভ্রমণ সম্পর্কে জানান। তাঁর এমন কাজ ভালো লেগেছে।’