ড. মো. শাহজাহান কবীর
দ্বিতীয় হিজরির ১৭ রমজান শুক্রবার সংঘটিত হয় ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ। ইসলামের ইতিহাসে প্রথম সশস্ত্র যুদ্ধ এটি। এ যুদ্ধে মুসলিমরা সংখ্যায় অনেক কম হয়েও মক্কার কাফির শক্তিকে পরাজিত করে। এর মাধ্যমে সত্য-মিথ্যার পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য পবিত্র কোরআনে বদর যুদ্ধকে সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী বলা হয়েছে। বদরের যুদ্ধ ছিল মুসলমানদের অস্তিত্ব রক্ষার প্রথম যুদ্ধ। এ যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা ছিল মাত্র ৩১৩ জন। আর মক্কার কুরাইশ বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা ছিল ১ হাজার।
মুসলিম বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা ও অস্ত্রবল মক্কার কুরাইশদের থেকে অনেক কম থাকা সত্ত্বেও আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমতে মুসলিম বাহিনী বিজয় লাভ করেছিল। এ বিজয় ইসলামের সুদূরপ্রসারী বিজয়ের দ্বার উন্মোচন করে। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘বদর প্রান্তরে যখন তোমরা হীনবল ছিলে। রাব্বুল আলামিনই তোমাদের সাহায্য করেছিলেন।’ (সুরা আলে ইমরান: ১২৩)
এ যুদ্ধে কুরাইশদের ৭০ জন নিহত হয় এবং ৭০ জন বন্দী হয়। ১৪ জন সাহাবি শহীদ হন। তাঁদের ১৩ জনের কবর এবং নামফলক বদর প্রান্তরে সংরক্ষিত রয়েছে। আর একজন সাহাবি আহত অবস্থায় মদিনায় ফেরার পথে কিছু দূর আসার পর শাহাদত বরণ করেন। সেখানেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। এ যুদ্ধে মুসলমানদের কেউ বন্দী হননি।
যুদ্ধের তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাঁর অনুগত বান্দাদের সব সময় সাহায্য করেন এবং অহংকারীদের অহংকার চূর্ণবিচূর্ণ করে দেন। ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ আমাদের যে শিক্ষা দেয় তা হলো—সব কাজে আল্লাহর ওপর অগাধ বিশ্বাস ও ভরসা রাখা, বিপদ-আপদসহ সব সময় আল্লাহর ওপর আস্থাশীল হওয়া এবং সত্যের পথে অটল-অবিচল থাকা।
ড. মো. শাহজাহান কবীর
চেয়ারম্যান, ইসলামিক স্টাডিজ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি