Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

স্বর্ণদ্বীপে বর্জ্যের স্তূপ বিষাক্ত হচ্ছে মাটি

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার

স্বর্ণদ্বীপে বর্জ্যের স্তূপ বিষাক্ত হচ্ছে মাটি

কক্সবাজার শহর ও শৈল দ্বীপ মহেশখালীর বঙ্গোপসাগরের মোহনায় অবস্থিত সোনাদিয়া দ্বীপ। ১০ হাজার একর আয়তনের দ্বীপটি মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ড। প্রাণবৈচিত্র্যে ভরপুর এ দ্বীপের একদিকে প্যারাবন (ম্যানগ্রোভ) ও অন্যদিকে বিশাল বালিয়াড়ির সৈকত। এটির আবার স্বর্ণদ্বীপ হিসেবেও দেশজুড়ে খ্যাতি রয়েছে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত এই দ্বীপের প্যারাবন উজাড় করে চিংড়িঘের তৈরি হয়েছে আগেই। এখন সৈকতে দখল করে আছে ভেসে আসা প্লাস্টিক ও অন্যান্য বর্জ্য। দখল ও দূষণে এ দ্বীপের বিরল প্রজাতির পশুপাখি, বৃক্ষ ও লতাগুল্ম ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

সম্প্রতি কক্সবাজারের বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দরের নেতৃত্বে একদল পরিবেশবিজ্ঞানী সোনাদিয়া দ্বীপ পরিদর্শনে গিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দ্বীপের পূর্বপাড়া থেকে পশ্চিমপাড়া পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সৈকতে শুধুই বর্জ্য। সমুদ্রের উচ্চ জোয়ারে ভেসে আসা বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক পণ্য, বোতল, প্লাস্টিকের স্যান্ডেল, ব্যাগ, জাল ও মেডিকেল বর্জ্যসহ নানা ধরনের বর্জ্যের স্তূপ হয়ে আছে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য একরাম মিয়া বলেন, বর্ষা মৌসুমে প্রায় সময় সামুদ্রিক জোয়ারে প্লাস্টিক পণ্য ও মরা জীবজন্তু ভেসে আসে। এর মধ্যে গত ২৪ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে কয়েক টন প্লাস্টিক বর্জ্য সৈকতে আছড়ে পড়ে। এসব বর্জ্য সরাতে সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সোনাদিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করে বেসরকারি সংস্থা নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (নেকম)। এ সংস্থার কক্সবাজারের ব্যবস্থাপক আবদুল কাইয়ূম বলেন, সৈকতের প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস হয়ে পড়ায় কচ্ছপের ডিম পাড়ার হারও কমে গেছে। এ ছাড়া অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী ও পাখি হারিয়ে যেতে বসেছে।

আবদুল কাইয়ূম আরও বলেন, এ দ্বীপে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন প্রজাতির কচ্ছপ বছরে ১০ থেকে ১২ হাজার পর্যন্ত ডিম পাড়ত। গত বছর এই সংখ্যা ১ হাজারে এসে দাঁড়ায়। চলতি মৌসুমে এখনো কচ্ছপ ডিম পাড়তেই আসেনি।

এ দ্বীপের পরিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য পর্যবেক্ষণে কাজ করছেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বুরি) বিজ্ঞানীরা। তাঁদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এখানে ভেসে আসা প্লাস্টিক বর্জ্য ভেঙে গুঁড়ো হয়ে মাটিতে মিশে যাচ্ছে। এতে মাটির বন্ধন তৈরি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং মাটি বিষাক্ত হয়ে উঠছে। ফলে সৈকতে বাস করা প্রাণীর আভাসস্থল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি সৈকতের প্রাকৃতিক উদ্ভিদের জৈব প্রতিরক্ষাব্যবস্থাও তৈরি হতে পারছে না বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।

প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণে সোনাদিয়া দ্বীপে ভয়াবহ মাটিদূষণের আশঙ্কা করছেন বুরির মহাপরিচালক সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর।

সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, এই দ্বীপে ভেসে আসা প্লাস্টিকগুলো মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হয়ে ফের সাগরে মিশে যেতে পারে। এতে সমুদ্রের পানিদূষণ হয়ে কোনো কোনো প্রাণী ও উদ্ভিদ পরিবেশ থেকে চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে।

সমুদ্রবিজ্ঞানী বলেন, তিন যুগ আগের সোনাদিয়ার জীববৈচিত্র্য ৯০ শতাংশই ধ্বংস হয়ে গেছে।

সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর। তিনি বলেন, এখনই পরিকল্পিত পদক্ষেপ নেওয়া গেলে সোনাদিয়ার জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব।

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ