হোম > ছাপা সংস্করণ

মিয়ানমারে সংঘাত: পড়ে আছে গোলা, সীমান্তে আতঙ্ক

আমানুর রহমান রনি ও মাঈনুদ্দীন খালেদ, নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে

মিয়ানমারের রাখাইন ও চিন রাজ্যে দেশটির সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সংঘাতের আঁচ গতকাল বৃহস্পতিবার খুব একটা বোঝা যায়নি সীমান্তের এ পারে। তবে গোলাগুলি থামার পর সীমান্তবর্তী এলাকায় দেখা দিয়েছে ভিন্ন চিত্র। সেখানে এদিক-সেদিক পড়ে আছে অবিস্ফোরিত মর্টার শেল, গুলি ও গুলির খোসা। এ নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোয়। আবাদি জমিতে যেতে ভয় পাচ্ছেন কৃষক।

এদিকে মিয়ানমারে এমন সংঘাতের কারণে সীমান্তে যোগাযোগ নিয়ে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে ভারত। নিরাপত্তা ইস্যুকে সামনে এনে গতকাল কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, দুই দেশের মধ্যে ভিসা ছাড়া অবাধ চলাচলে যে চুক্তি ছিল, তা স্থগিত হতে যাচ্ছে।

এক সপ্তাহের বেশি সময় মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সঙ্গে সরকারি বাহিনীর লড়াই চলছে। এই লড়াইয়ে টিকতে না পারে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যরা পালিয়ে বাংলাদেশে আসছেন। এ ছাড়া ওপার থেকে আসা গুলিতে বাংলাদেশে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। তবে গতকাল সেখানে খানিকটা শান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করেছে। এরই মধ্যে দুপুরে বান্দরবানের নাইক্ষ‍্যংছড়ির সীমান্তের ঘুমধুমের ৪ নম্বর ওয়ার্ড নোয়াপাড়া এলাকা থেকে একটি রকেট লঞ্চার উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়রা অবিস্ফোরিত রকেট লঞ্চারটি পড়ে থাকতে দেখে বিজিবিকে খবর দেন। পরে বিজিবির সদস্যরা গিয়ে সেটি উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। নোয়াপাড়ার ওই এলাকায় গতকাল গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রের গুলি এবং গুলির খোসা পড়ে আছে।

নোয়াপাড়ার বাসিন্দা আব্দুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাড়ির পেছনে অবিস্ফোরিত রকেট লঞ্চার দেখে ভয় পেয়ে যাই। পরে বিজিবিকে খবর দিয়েছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘ধানখেতের মধ্যেও এ রকম বিভিন্ন গুলি দেখেছি। ধানখেতে পানি শুকিয়ে গেছে। তবে ভয়ে খেতে যেতে পারছি না। বীজ নষ্ট হয়ে যাবে যদি আর কদিন দেরি হয় পানি দিতে। বিজিবি আমাদের সেখানে যেতে নিষেধ করেছে।’

এদিকে বুধবার বিকেলে ঘুমধুম সীমান্ত থেকে একটি অবিস্ফোরিত হ্যান্ড গ্রেনেড উদ্ধার করে বিজিবি। গুলির খোসা, গুলি পড়ে থাকতে দেখা গেছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, তমব্রু, ঘুমধুম, কক্সবাজারের উখিয়া, বালুখালী, পালংখালী, থাইংখালী এবং টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং, রহমতেরবিল, হ্নীলা সীমান্তেও। বাড়িতে এসে পড়া গুলি অনেকেই সংরক্ষণে রেখেছেন। এমনই একজন রহমতেরবিলের দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা আয়েশা বেগম। বাড়ির দেয়াল দেখিয়ে বলেন, গত বুধবার গোলাগুলির সময় এই দেয়ালে এসে একটি গুলি লাগে।

সীমান্তের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কৃষক বদিউর রহমান বলেন, জেলেরা মাছ ধরতে যেতে পারছেন না নদীতে। কৃষকেরা ধানখেতে যেতে পারছেন না। বিজিবি কাউকেই সীমান্তে যেতে দিচ্ছে না। সীমান্তে গোলাগুলির আতঙ্ক এখনো আছে।

এদিকে ঘুমধুম ও তমব্রু সীমান্ত এলাকায় যারা বাড়ি ছেড়েছে, তাদের অনেকেই এখনো ফেরেনি। সেখানকার পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তিনটি মাদ্রাসা ছয় দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয়ও রয়েছে। এটি এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র। ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, গোলাগুলি আবার শুরু হলে কী হবে এসএসসি পরীক্ষার, এ নিয়ে অভিভাবকেরা চিন্তিত। তিনি আরও বলেন, এই এলাকায় গোলাগুলি হচ্ছে না তিন দিন। তবে আতঙ্ক বা শঙ্কা কাটেনি। এলাকার কয়েক হাজার মানুষ এখনো বাড়ি ফেরেনি। 

বিজিপির সদস্যরা টেকনাফে
মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় লড়াই ছেড়ে পালিয়ে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে এসেছেন ৩২৯ জন বিজিপি সদস্য। এই সীমান্তরক্ষীদের টেকনাফসংলগ্ন এলাকায় নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে বিজিবি। গতকাল ১০০ বিজিপি সদস্যকে নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে টেকনাফ হ্নীলা উচ্চবিদ্যালয় অস্থায়ী ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল আবদুল্লাহ আল মাশরুকী। তিনি জানান, বিজিপির এই সদস্যদের ৩৪ বিজিবির তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। 

চুক্তি স্থগিত করবে ভারত
মিয়ানমারে লড়াইয়ের আঁচ লেগেছে ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতেও। লড়াই ছেড়ে প্রাণে বাঁচতে সেখানেও গেছেন মিয়ানমারের বাহিনীর সদস্যরা। বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের এই সংঘাতকে কেন্দ্র করে ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ইস্যুকে গতকাল সামনে এনেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের যে ‘ফ্রি মুভমেন্ট জেরিম (এফএমআর)’ চুক্তি ছিল, তা শিগগিরই স্থগিত করার সুপারিশ করেছেন।

২০১৮ সালে এই এফএমআর চুক্তি হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে। এই চুক্তি অনুসারে ভারতের মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল প্রদেশ ও মিয়ানমারের সীমন্তবর্তী উপজাতিরা দুই দেশের ১৬ কিলোমিটারের মধ্যে অবাধে চলাচল, বসবাস করতে পারবে। এ জন্য কোনো ভিসার প্রয়োজন হবে না। এই চুক্তি স্থগিত হলে সেই সুযোগ আর থাকবে না।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন